আল-জাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত চায় বিএনপি
১০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:২৪
ঢাকা: কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাতে বাংলাদেশকে নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উত্থাপিত অভিযোগগুলো নিয়ে জাতিসংঘকে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সাতটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এরই মধ্যে জাতিসংঘকে এ বিষয়ে তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে যে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে, এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তার প্রতি বিএনপি পূর্ণ সমর্থন ঘোষণা করছে। বিএনপি জাতিসংঘকে তার নিজস্ব পদ্ধতিতে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে উঠে আসা অভিযোগের বিষয়ে আশু তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছে।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিএনপির পক্ষ থেকে এ আহ্বান জানান। দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের আগে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আল-জাজিরার প্রতিবেদন দুঃশাসনের এক বিশাল ক্যানভাসের ক্ষুদ্র একটি চিত্র। এই প্রতিবেদন রাষ্ট্রক্ষমতার চরম অপব্যবহার ও মাফিয়া সংস্কৃতির অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি অংশ। রাষ্ট্রযন্ত্রকে কুক্ষিগত করে ক্ষমতার দখলদারিত্ব অব্যাহত রাখার ভয়ানক প্রক্রিয়ার এক অতি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশ এবং লাগামহীন সাগরসম দুর্নীতির একটি টিপ অব দ্য আইসবার্গ এই প্রতিবেদন।
তিনি আরও বলেন, একদিকে সরকার আল-জাজিরার পুরো প্রতিবেদনকেই মিথ্যা ও বানোয়াট বলে নাকচ করে দিয়েছে। অন্যদিকে দায়সারাভাবে জাতিসংঘের তদন্ত আহ্বানে অনাপত্তি জানিয়ে বলেছে, তদন্ত হতেই পারে। আবার অন্যদিকে আল-জাজিরার বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সেখানে তথ্যগত ভুল আছে, সেগুলো আমরা তুলে ধরব এবং আমরা মামলা করব। প্রকৃতপক্ষে আল-জাজিরার প্রতিবেদনে উল্লেখিত অভিযোগগুলোর সত্যতা যাচাই না করেই সরকার প্রতিবেদনটিকে ঢালাওভাবে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। অথচ সঠিক তথ্যের প্রকাশই হচ্ছে ভুল তথ্যের জবাব। আর অপ্রচার থেকে ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের উপায় হচ্ছে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরা।
সেনাবাহিনীদে ‘দেশের গর্ব’ আখ্যা দিয়ে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের অহংকার। কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর দুর্নীতি বা নৈতিকতা বিবর্জিত কর্মের কারণে রাষ্ট্রের সংবেদনশীল এই মহান প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
‘সেনাবিহিনী তথা প্রতিরক্ষা বাহিনী জাতীয় ঐক্যের গর্বিত প্রতীক। প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে রেখে তার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি বজায় রাখা দলমত-নির্বিশেষে আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব,’— বলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। এতে সিঙ্গাপুর থেকে যোগ দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য জামির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস ও আবদুল মঈন খান।
সারাবাংলা/এজেড/টিআর