‘মাকড়শার জালের মতো করে করোনাকে আটকে ফেলেছি’
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০০:৪২
ঢাকা: অনেক মাকড়সার জাল দিয়ে যেমন একটি সিংহকেও আটকে রাখা যায়, ঠিক তেমনি সবাই মিলে করোনাভাইরাসকে (কোভিড-১৯) আটকে রাখা সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, অনেক মাকড়সার জাল দিয়ে একটা সিংহকেও আটকে রাখা যায়। আমরাও সবাই মিলে করোনাকে আটকে ফেলেছি। আমরা ধরেছি। আমাদের ২০ হাজার বেড তৈরি করা হয়েছে। একই হাসপাতালে আমাদের করোনা চিকিৎসা দিতে হয়েছে, নন-করোনা রোগীরও চিকিৎসা দিতে হয়েছে। এটা সবার সহযোগিতায় সম্ভব হয়েছে।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জাতীয় কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম: বেসরকারি স্বাস্থ্য খাতের সম্পৃক্ততা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। আলোচনা সভাটি আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিক্যাল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ)।
আলোচনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় দেশের লোকেরা হয়তো প্রশংসা করেননি, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আমাদের যথেষ্ট প্রশংসা করেছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রশংসা করে চিঠি পাঠিয়েছে। এগুলো তো এমনি এমনি হয় নাই। আমাদের দেশের মৃত্যু হার ১ দশমিক ৫ শতাংশ। আমাদের দেশে সংক্রমণ হারও অন্যান্য দেশের তুলনায় ভালো। প্রাইভেট সেক্টর, সরকারি সেক্টর একসঙ্গে কাজ করেছি বলেই এমনটা হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশে ৭০ লাখ ভ্যাকসিন মজুত আছে। এর মধ্যে দুই লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। তাদের সবাই সুস্থ আছেন। কিছু লোকের সমস্যা দেখা দিয়েছে, তবে এটি তেমন কিছু নয়।
করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগে বেসরকারি হাসপাতালগুলোর অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার দাবি আপনারা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতিক্রমে বেসরকারি পর্যায়ের ভ্যাকসিন দিতে পারবেন। এটার ব্যবস্থা আমরা করব। নীতিমালা তৈরি করে, ঔষধ প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এটার ব্যবস্থা করব। দেশে ৬০ শতাংশ উন্নয়ন অবদান রাখে বেসরকারি খাত। করোনা নিয়ন্ত্রণে আপনারা যেমন ভূমিকা রেখেছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচিতেও অবদান রাখবেন।
অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, আমি ভ্যাকসিন নিয়েছি। মন্ত্রণালয়ের সবাই ভ্যাকসিন নিয়েছেন। ভ্যাকসিনের কোনো সমস্যা নেই। সরকারের এখন ছয় কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু দেশের ১৬ কোটি মানুষকেই ভ্যাকসিন না দিতে পারলে সংক্রমণের শঙ্কা থেকেই যায়। এক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমে যুক্ত করে নিলে সহজভাবে সবাইকেই ভ্যাকসিন দেওয়া সম্ভব হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে বয়স কমিয়ে ৪০ করা হয়েছে। আমি মনে করি, ১৮ বছরের নিচেও ভ্যাকসিন দেওয়ার বিষয়ে গবেষণা হওয়া উচিত। তারাও তো আক্রান্ত হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময়ে সরকারের দেওয়া প্রণোদনা ছিল একটি বিশাল সিদ্ধান্ত। সময়মতো করোনার প্রণোদনা ঘোষণা করার কারণেই অর্থনীতির সব খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মহামারির সময়ে অর্থনীতি টিকিয়ে রাখতে এর কোনো বিকল্প ছিল না।
আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ, বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া, আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান আনোয়ার খানসহ অন্যরা।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর