Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বাংলাদেশ হবে উন্নত-সমৃদ্ধ— সে লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:০৯

ফাইল ছবি

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি ঘর আলোকিত হবে, মানুষ নাগরিক সুবিধা ও উন্নত জীবন পাবে, সুন্দরভাবে বাঁচবে। বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার দেশ। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর ৪১তম জাতীয় সমাবেশ ২০২১-এর কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি গাজীপুরের সফিপুর বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি একাডেমির অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর বিভিন্ন সেবামূলক কাজের প্রশংসা করেন এবং দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বিভিন্ন ধাপে তাদের অবদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাল্যবিবাহ রোধ, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদে আমাদের দেশের যুবসমাজ যাতে সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয় এ ব্যাপারে বিশেষ ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন। এরকম ভূমিকা আরও বেশি রাখা প্রয়োজন। সেজন্য আপনাদের বিভিন্ন তথ্য-প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন থেকে শুরু করতে হবে।’ ছেলেমেয়েরা যেন বিপথে না যায়, সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়ার অনুরোধ জানান প্রধানমন্ত্রী।

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর কল্যাণে তার সরকার নানামুখী পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে বলেও জানান তিনি। আর্থিকভাবে অসচ্ছ্ল অনেক আনসার-গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর সদস্যকে বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার কার্যক্রম চলমান আছে। পর্যায়ক্রমে প্রত্যেক এলাকায় এভাবে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে বলে জানান শেখ হাসিনা।

এছাড়া মুজিববর্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষকে জমির পাশাপাশি ঘর উপহার দেওয়ার কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বাংলাদেশে একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না; সবারই একটা ঠিকানা হবে। তাই বাংলাদেশের প্রতিটি গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষকে আমরা ঘর তৈরি দেওয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছি এবং আমরা তা করে যাচ্ছি। মুজিববর্ষে বাংলার জনগণের জন্য এটাই হবে আমাদের উপহার, আমরা সে ব্যবস্থা করে যাচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

এছাড়া গ্রামের মানুষের যাতে আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পায় সেলক্ষ্যেও তার সরকারের ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’ কর্মসূচি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রতিটি গ্রামের মানুষ যেন নাগরিক সুবিধা পায় তাই ‘আমার গ্রাম, আমার শহর’ এটাও আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং সেটাও বাস্তবায়ন করছি। সেক্ষেত্রেও আমাদের আনসার-ভিডিপির বিরাট অবদান থাকতে পারে। সেখানে কাজ করার পাশাপাশি নিজেদের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেন।’

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা করোনাভাইরাস মোকাবিলা করছি। আমি অনুরোধ করব, আনসার ভিডিপির প্রত্যেক সদস্য যেন ভ্যাকসিন নেয়। আমরা ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করেছি। অনেকে ভয় পান, সুঁই ফোঁটাতেও ভয় পান; এরকমও কিছু কিছু মানুষ আছে। কিন্তু তারা যাতে রোগাক্রান্ত না হন সেজন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষার এই ব্যবস্থা আমরা করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন নিতে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘নিবন্ধনের জন্য ইতোমধ্যে আমাদের যে ডিজিটাল সেন্টার রয়েছে, সেখানে গিয়ে সবাই নিবন্ধন করতে পারবেন।’ আনসার ভিডিপির সদস্যদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আপনারা গ্রামের মানুষকে ভ্যাকসিন নিতে উদ্বুদ্ধ করবেন। বৈশ্বিক মহামারি থেকে বাংলাদেশের মানুষ যেন মুক্তি পায় সেজন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তার লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ অন্ন বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও উন্নত জীবন পাবে। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। সেখান থেকে ৩০ ধরনের ওষুধ বিনা পয়সায় দিচ্ছি। এছাড়া এখন আমাদের লক্ষ্য দেশে অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়া। সেটা আমরা প্রায় করেই ফেলেছি। যেখানে গ্রিডলাইন আছে, সেখানে শতভাগ বিদ্যুৎ চলে গেছে। এছাড়া সোলার প্যানেল ও সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দ্বীপাঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিচ্ছি।’

করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে মানুষের পাশে বিভিন্ন সহায়তার হাত বাড়িয়ে দাঁড়ানোর জন্য আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান এবং করোনাভাইরাস সংক্রমণে এ বাহিনীর ১৯ জন সদস্য মারা যাওয়ার ঘটনায় তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের বক্তব্য মধ্যে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন এবং আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর মহাপিরচালক মেজর জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম। এদিন অসীম সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ সেবাধর্মী কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষাবাহিনীর ১৪০ জন সদস্যকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পদক দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তাদের হাতে পদক তুলে দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম

আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী উন্নত-সমৃদ্ধ প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর