জেলে ঢুকে চোরচক্রে, ৩৯ ভরি সোনা চুরি করে ধরা
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:০৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: স্ত্রীর দায়ের করা নারী নির্যাতনের মামলায় কারাগারে গিয়ে চোরচক্রে ঢোকেন পেশায় সোনার কারিগর সুমন ধর। কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে একটি চাঞ্চল্যকর চুরির ঘটনায় জড়িয়ে গ্রেফতার হয়েছেন সুমন। তার সঙ্গেই ধরা পড়েছেন এই চক্রের আরও তিন সদস্য।
চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার ফিরিঙ্গিবাজারে একটি বাসায় চুরির ঘটনা তদন্তে নেমে চার জনকে গ্রেফতারের পর তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতার চার জন হলেন— আব্দুল আজিজ (৩৩), মো. বশির ওরফে বশর (৪৮), সুমন ধর (৩৬) ও সুমন সাহা (৩৩)। এদের মধ্যে আজিজ ও বশর পেশাদার চোর। সুমন ধর ও সুমন সাহা চোরাই সোনার ক্রেতা। সুমন ধর চুরির পরিকল্পনাকারীদের মধ্যেও একজন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘নারী নির্যাতনের অভিযোগে স্ত্রীর দায়ের করা একটি মামলায় ২০১৮ সালে কারাগারে ছিলেন সুমন ধর। কারাগারে তার সঙ্গে পরিচয় হয় পেশাদার তিন চোর আজিজ, বশর ও ওসমানের সঙ্গে। এরপর সুমন চোরদের চক্রে জড়িয়ে পড়ে। চুরির জন্য সে অগ্রিম টাকা বিনিয়োগ করত। চুরির পরিকল্পনাও সে সাজাত। আজিজরা তিন জন মিলে এলাকা রেকি করে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করত। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন ধর, আজিজ ও বশরের কাছ থেকে এসব তথ্য আমরা পেয়েছি।’
গত বছরের ১ অক্টোবর রাতে নগরীর ফিরিঙ্গি বাজার জে এম সেন স্কুল গলির একটি ভবনে চুরি হয়। সে বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের ৩৯ ভরি সোনার অলংকার চুরি হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। এ মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ ঘটনার কিছু দিনের মধ্যে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে চোরদের বহনকারী সিএনজি অটোরিকশা শনাক্ত করে চালক মো. মুছাকে গ্রেফতার করে। মুছার কাছ থেকে চোরদের শারিরীক গঠন সম্পর্কে জানা গেলেও নাম-ঠিকানা জানা যায়নি।
ওসি নেজাম বলেন, ‘শারীরিক গঠন জেনে আমরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আজিজকে শনাক্ত করি। মঙ্গলবার কর্ণফুলী থানার দক্ষিণ কূল এলাকা থেকে আজিজকে এবং তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ইছানগর থেকে বশরকে গ্রেফতার করি। তারা জানায়, সোনার কারিগর সুমন ধরের কাছে তারা চুরি করা সোনা বিক্রি করেছেন। এরপর আমরা সুমন ধরকে গ্রেফতার করি। জিজ্ঞাসাবাদে সুমন ধর জানায়, সে সোনাগুলো হাজারি গলিতে সুমন সাহা নামে এক জনের কাছে বিক্রি করছে গলিত হিসেবে। বুধবার রাতে তাকে গ্রেফতারের পর গলিত সোনার ২৩ ভরির বেশি ওজনের একটি বার উদ্ধার করা হয়েছে।’
সুমন ধরের পরিকল্পনায় এ পর্যন্ত চারটি চুরির তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে ওসি নেজাম বলেন, ‘ফিরিঙ্গিবাজারের ঘটনার দিন তারা ওই বাসা থেকে একটি সিন্দুক ও একটি আইফোন চুরি করে নিয়ে যান। নদীপথে তারা নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে সিন্দুকটি কাটেন এবং কাটা অংশ ও মোবাইল ফোন নেটি নদীতে ফেলে দেন। সিন্দুক থেকে সোনা নিয়ে ইছানগরে বশরের বাসায় রাখেন। সেখান থেকে সুমন ধরকে ফোন করেন। সুমন এসে তার বাসা থেকে সোনার অলংকারগুলো নিয়ে যান।’
চোরাই সোনার ক্রেতা হিসেবে গ্রেফতার হয়ে সুমন ধরের ভগ্নিপতি নারায়ণ ধরও কারাগারে আছেন বলে জানিয়েছেন ওসি নেজাম।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর