সাবেক স্বামীর মামলায় দণ্ডিত বর্তমান স্বামীর জামিন
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:৪৮
ঢাকা: বরগুনার পাথরঘাটা এলাকার ফাতেমা বেগমকে অপহরণের অভিযোগে তার সাবেক স্বামী মো. জাকির হোসেনের করা অপহরণের মামলায় বর্তমান স্বামী শাহ আলমকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এ মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া ২০ বছরের দণ্ডের বিরুদ্ধে শাহ আলমের আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামি শাহ আলমের পক্ষে শুনানি করেন মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো.সারওয়ার হোসেন বাপ্পি।
আদেশের বিষয়টি সারাবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী মোাহাম্মদ শিশির মনির। তিনি জানান, এই মামলায় জামিন পেলেও তার বিরুদ্ধে যৌতুকের আরেক মামলায় তিন বছরের দণ্ড থাকায় শাহ আলম এখনই ছাড়া পাচ্ছেন না।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ফাতেমা বেগম তার স্বামী জাকির হোসেনকে তালাক দেন। পরে ফাতেমা শাহ আলমের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি ফাতেমা-শাহ আলমের ঘরে প্রথম সন্তান এবং ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় সন্তান জন্ম নেন।
অন্যদিকে, ২০১২ সালের ৫ মে অপহরণের ঘটনায় মো. জাকির হোসেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শাহ আলমসহ আট জনের বিরুদ্ধে বরগুনা উপজেলার পাথরঘাটা থানায় মামলা করেন। সে মামলার এজাহারে মো. জাকির হোসেন অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমকে আসামিরা অপহরণ করে। পরে ২০১২ সালের ৩০ আগস্ট এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাথরঘাটা থানার এসআই আব্দুস সাত্তার শাহ আলমসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। পরে ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এই মামলায় ফাতেমা বরগুনার পাথরঘাটার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ ধারার জবানবন্দিতে বলেন, ‘আমাকে শাহ আলম অপহরণ করেননি। শাহ আলমকে আমি মাসখানেক আগে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি। ২০০৭ সালে জাকিরের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু জাকিরের অত্যাচারে অতীষ্ঠ হয়ে শাহ আলমকে বিয়ে করি। তবে দ্বিতীয় বিয়ের ৪/৫ মাস আগে জাকিরকে তালাক দেই। সে এখন আর আমার স্বামী নয়। আমাকে কেউ অপহরণ করেনি।’
পরে এই মামলার সাক্ষীদের সাক্ষ্য ও উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান আসামি শাহ আলমকে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দিয়ে রায় দেন। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/টিআর