‘কোভিশিল্ডের ২ ডোজে ৮-১২ সপ্তাহের ব্যবধান বেশি কার্যকরি’
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:২২
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনা ভ্যাকসিনের দুই ডোজ নেওয়ার ক্ষেত্রে ৮-১২ সপ্তাহ পর্যন্ত বিরতি নিলে কার্যকারিতা বাড়ে এবং সুরক্ষা বেশি পাওয়া যায় বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এমনকি নতুন ধরন শনাক্ত হওয়া দেশগুলোতেও এই ভ্যাকসিন ব্যবহারের সুপারিশ করেছে ডব্লিউএইচও। খবর বিবিসি।
এর আগে কেবল ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতেই ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রে দুই ডোজের মধ্যে ছয় সপ্তাহের বিরতি দেওয়ার সুপারিশ করেছিল ডব্লিউএইচও।
ডব্লিউএইচও বলছে, ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রেও অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন ব্যবহার করা যেতে পারে। কয়েকটি দেশ অবশ্য এই ভ্যাকসিন ৬৫’র বেশি বয়সীদের দেওয়ার বিরোধী। যুক্তরাজ্যে ভ্যাকসিনের এই দুই ডোজের মধ্যে বেশি বিরতিতে ভালো কার্যকারিতার প্রমাণ মিলেছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
বিবিসি জানাচ্ছে, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনকে ‘বৈশ্বিক ভ্যাকসিন’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। কারণ, ভ্যাকসিনটি দামে তুলনামূলক সস্তা, গণহারে উৎপাদন করা যায় এবং সাধারণ তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য।
তবে, করোনার নতুন ধরনের ক্ষেত্রে এ ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এছাড়া তথ্যের স্বল্পতা থাকায় এটি বয়স্কদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে কি না বা দুটি ডোজের মধ্যে কত দিন বিরতি দিতে হবে, তা নিয়ে বিতর্ক চলছে।
ডব্লিউএইচও’র ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞ ফোরাম স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব এক্সপার্টস (এসএজিই) ভ্যাকসিন পরীক্ষার তথ্য প্রমাণ যাচাই করে অন্তর্বর্তীকালীন সুপারিশে বলছে, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন মোটের ওপর ৬৩ শতাংশ কার্যকর।
তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভ্যাকসিনটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগে দেখা যায়, মৃদু ও মাঝারি মাত্রার অসুস্থ তরুণদের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিনটি ‘সামান্য সুরক্ষা’ দিতে পারে। ডব্লিউএইচও’র ভ্যাকসিন কার্যক্রমের পরিচালক ক্যাথেরিন ও’ব্রায়েন বলেন, দক্ষিণ আফ্রিকার গবেষণাটি ছিল অসম্পূর্ণ। এই ভ্যাকসিন গুরুতর পর্যায়ের কোভিড ঠেকাতে এখনো সম্ভাবনাময়। অক্সফোর্ডের গবেষকেরা দাবি করেন, তাদের ভ্যাকসিনটি কোভিড-১৯ রোগীদের গুরুতর অসুস্থতা থেকে বাঁচাতে পারে।
ডব্লিউএইচও’র এসএজিই চেয়ারম্যান আলেজান্দ্রো ক্যারাভিয়োটো বলেন, যেসব দেশে করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়েছে, সেখানেও এ ভ্যাকসিন ব্যবহারের সুপারিশ না করার কোনো কারণ নেই।
এ ব্যাপারে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট বলেন, ডব্লিউএইচও ভ্যাকসিনটির সুপারিশ করেছে, এটা দারুণ খবর। এ সিদ্ধান্ত ভ্যাকসিনের আরও বিস্তৃত ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথ খুলে দেবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশ ও ডোজের মধ্যে দীর্ঘ বিরতির বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
ডব্লিউএইচও এ পর্যন্ত তিনটি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে। সংস্থাটি সবার আগে মার্কিন বহুজাতিক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও জার্মান প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়। এরপর মার্কিন জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মডার্নার ভ্যাকসিন অনুমোদন দেওয়া হয়। সবশেষে অনুমোদন পায় অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন।
সারাবাংলা/একেএম