প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার জেটিআই, অর্থমন্ত্রীকে জাপান দূতের চিঠি
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:১৫
ঢাকা: বাংলাদেশে ব্যবসা করতে গিয়ে অনেক প্রতিকূল পরিস্থিতির শিকার হচ্ছে বলে বলে অভিযোগ জাপান টোবাকো ইন্টারন্যাশনালের (জেটিআই)। অর্থমন্ত্রী বরাবর লেখা ঢাকায় নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির সই করা এক চিঠিতে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। চিঠিতে এমন পাঁচটি প্রতিকূল পরিস্থিতির উল্লেখ করে জেটিআইয়ের পক্ষে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গত ২১ জানুয়ারি অর্থমন্ত্রীকে ওই চিঠি পাঠান ইতো নাওকি। চিঠির বিষয়বস্তু হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে— জেটিআই বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ করেছে, কিন্তু নীতি পরিবর্তন ও প্রতিযোগিতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেটিআই বাংলাদেশে বড় অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগ করে, যা দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে সহায়তা করছে। রাজস্ব আহরণে জেটিআই দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নীতি পরিবর্তনের কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে নানাবিধ সমস্যা মোকাবিলা করতে হচ্ছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, কর সংক্রান্ত ২০১৯ সালের রাজস্ব নীতি তামাক খাতের রাজস্ব আয় বাড়াতে প্রভাব ফেলছে। এই নীতির ফলে বাজারে কম দামের সিগারেটে প্রভাব পড়েছে। এতে প্রকৃত অর্থে সরকারের রাজস্ব আয় কম হচ্ছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, জেটিআই একাধিক ব্র্যান্ডের পণ্য বাজারজাত করে থাকে। গত বছরের নভেম্বরে জেটিআই সুগন্ধিযুক্ত একটি ব্র্যান্ডের সিগারেট বাজারজাত করে। কিন্তু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে ব্যতিক্রমী একটি এসআরও জারির মাধ্যমে সুগন্ধিযুক্ত সিগারেট বাজারজাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা সরাসরি জেটিআই পণ্যের ওপর প্রভাব ফেলেছে। অথচ বাংলাদেশের বাজারে গত ১০ বছরে এই ধরনের পণ্যের ব্যবহার রয়েছে।
‘বাংলাদেশের তামাক খাতের ৭৮ শতাংশ বাজার একটি প্রতিষ্ঠানের আওতায় এবং তারাই এই খাতটি নিয়ন্ত্রণ করছে। জেটিআই বাংলাদেশের বাজারে আসার পর একাধিক পর্যায় থেকে কর্তৃত্বমূলক আচরণ এবং প্রতিযোগিতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের শিকার হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এমন আচরণের নিদর্শন নেই। এ বিষয়ে জেটিআইয়ের কাছে সব তথ্য-প্রমাণ রয়েছে,’— দাবি করা হয় চিঠিতে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অসহযোগিতার বিষয়টি উল্লেখ করে জেটিআই বলছে, নতুন উদ্ভাবনি পণ্য আমদানি ও বৃহৎ মূলধনের খরচ জোগাতে জেটিআই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে তৈরি পণ্যের আমদানি (ফিনিশড গুডস) শুল্ক, এইচএস কোডসহ যাবতীয় বিষয়গুলো পরিষ্কার করতে অনুরোধ করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের কাছে গুরুত্ব পায়নি।
স্থানীয় সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান জেটিআইয়ের কাছে অযৌক্তিক দাবি করেছে অভিযোগ তুলে ওই চিঠিতে বলা হয়, পরবর্তী সময়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের হস্তক্ষেপে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু আগামী বছরও লাইসেন্স নবায়ন বিষয়ে জেটিআই একই ধরনের প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে পারে। তাই এমন প্রতিকূলতা যেন মোকাবিলা করতে না হয়, সেজন্য আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ চিঠিতে জানানো হয়।
সারাবাংলা/জেআইএল/এএম