বিস্তৃত হচ্ছে নারী পল্লী কর্মসংস্থান প্রকল্প
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:৪৫
ঢাকা: বিস্তৃত হচ্ছে নারী পল্লী কর্মসংস্থান প্রকল্প। এ লক্ষ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে দারিদ্রপীড়িত নারীদের জন্য সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্প হাতে নিচ্ছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রণালয়।
এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তাপ্রাপ্ত সুফলভোগী সদস্যদের বার্ষিক গড় মাথাপিছু আয় ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে সুফলভোগী নারী সদস্যদের গড় মাথাপিছু তিন হাজার টাকা এবং স্কুলগামী কিশোরীদের গড় মাথাপিছু পাঁচ হাজার টাকার নিজস্ব সঞ্চয় তহবিল সৃষ্টি করা হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৪৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক (পরিকল্পনা) এস. এম. মাসুদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, প্রথম পর্যায়ের প্রকল্প বাস্তবায়ন, পরীবিক্ষন ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) মূল্যায়ন করেছে। এক্ষেত্রে থার্ডপার্টির মাধ্যমে মূল্যায়নের পর দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্প নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। সে প্রেক্ষিতে প্রকল্পটি দ্বিতীয় পর্যায়ে সম্প্রসারিত হচ্ছে।
সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর যশোর সফরের প্রাক্কালে ওই অঞ্চলের নারীদের উন্নয়ন, কমৃসংস্থান সৃষ্টি এবং ক্ষমতায়নের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা দেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহত্তর যশোরের চার জেলার ২১ উপজেলায় ১৯৯৮ সালের জুলাই থেকে ২০০৩ সালের জুনের মধ্যে দারিদ্রপীড়িত নারীদের জন্য আত্মকর্মসংস্থান কর্মসূচি শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়।
পরবর্তীতে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মুল্যায়ন বিভাগ এই প্রকল্পের মূল্যায়ন প্রতিবেদনের সুপারিশের জন্য খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ৫৯ উপজেলায় ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে মোট ১৫৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে বিআরডিবি দারিদ্রপীড়িত নারীদের সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রকল্পের প্রথম পর্যায় বাস্তবায়িত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় প্রকল্পটির দ্বিতীয় পর্যায় বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে দারিদ্রপীড়িত নারীদের জন্য সমন্বিত পল্লী কর্মসংস্থান সহায়তা প্রথম পর্যায়ের প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার রশিদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রথম পর্যায়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ দারিদ্রপীড়িত নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে অনেকে দারিদ্র্তা থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন। প্রথম পর্যায়ের সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পটির প্রস্তাব করা হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত প্রকল্পটির প্রক্রিয়াকরণ ইতোমধ্যেই শেষ করেছে কমিশন। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় প্রকল্পটি উপস্থানের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে চলতি বছর থেকে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি)। প্রকল্পটি খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগের ১৭ জেলার ৫৯ উপজেলার ৪৭২ ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রম হচ্ছে, জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে উপকারভোগী নির্বাচন, নারী উপকারভোগীদের সমন্বয়ে নারী সমিতি গঠন এবং স্কুলগামী কিশোরীদের সমন্বয়ে কিশোরী সংঘ গঠন। এছাড়াও, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে পুঁজি গঠন এবং তার যথাযথ ব্যবহার, কিশোরীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষন, সঞ্চয় প্রণোদনা দেওয়া, নারী উপকারভোগী এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ। এর বাইরেও, আইসিটি কার্যক্রম, নোয়াখালী পল্লী উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ক্রয়সহ ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়ন এবং আইনি সহায়তা ও সামাজিক উন্নয়ন করা হবে।
এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানি সম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য জাকির হোসেন আকন্দ সারাবাংলাকে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাসে এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
সারাবাংলা/জেজে/একেএম
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের বৈঠক নারী পল্লী কর্মসংস্থান প্রকল্প পরীবিক্ষন ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি) বাস্তবায়ন