Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

করোনাভাইরাস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে: প্রধানমন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:০৩

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সম্মিলিত পদক্ষেপের ফলে করোনাভাইরাস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। করোনাকালে প্রত্যেকে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার ফলে করোনার মতো একটা মহামারি থেকে আমরা অনেকটাই সুরক্ষিত হতে পেরেছি।

রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

কুমুদিনী হাসপাতালের এক নার্সকে দিয়ে দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী। তিনি ওই নার্সকে ধন্যবাদ জানান। এসময় ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সারাদেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে। যারা ভ্যাকসিন নিচ্ছেন, তারাসহ সবাই যদি স্বাস্থ্যসুরক্ষাবিধি মেনে চলে, তাহলে আশা করি দেশ থেকে করোনার প্রাদুর্ভাব পুরোপুরি চলে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারের মেয়াদে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করে কর্মসূচি বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণের ক্ষেত্রে নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কথাও তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ভ্যাকসিন নেওয়ার ব্যাপারে অনেকের একটু দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছিল। তবে সাহসী ভূমিকা রেখেছে কুমুদিনী হাসপাতালের নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা। আর এখন আল্লাহর রহমতে কোনো সমস্যা নেই। সবাই খুব আগ্রহ আর উৎসাহ নিয়ে ভ্যাকসিন নিতে চলে আসছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা তিন কোটি ভ্যাকসিন কিনে রেখেছি। তখনও রিসার্চ চলছিল। তখনও ডব্লিউএইচও অনুমোদন করেনি। কিন্তু আমি অ্যাডভান্স দিয়ে রেখেছি এই কারণে যে শুরুতেই যেন আমরা ভ্যাকসিন পেতে পারি। কারণ আমরা অনেক ঘন জনবসতির দেশ। দেশের মানুষের সুরক্ষা, তাদের যারা সেবা দিচ্ছে তাদের সুরক্ষারজন্য ভ্যাকসিন সব থেকে বেশি প্রয়োজন। সেই লক্ষ্য নিয়েই এটা আমরা করেছি।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ভারত আমাদের ২০ লাখ ভ্যাকসিন উপহার দিয়েছে। আরও অন্যান্য দেশ দিতে চাচ্ছে। আমরা সবই নেব, যেন গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত এই ভ্যাকসিন দিতে পারি। আমরা সেই ব্যবস্থা করব।

করোনা চিকিৎসা ও করোনাকালে মানুষের সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীসহ যারা মানুষের সেবা করে যাচ্ছে, এসময় তাদেরও আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী

কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধন ঘোষণা করে শেখ হাসিনা বলেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের স্বাস্থ্যখাত আরও একধাপ এগিয়ে যাবে এবং বেসরকারি খাতে সেবামূলক কাজে আরও অনেকে উৎসাহিত হয়ে এগিয়ে আসবে।

পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের সবাইকে হারিয়ে আমি আর আমার ছোট বোন বেঁচে যাই। এতগুলো শোক সহ্য করা খুবই কঠিন। তারপর শুধু এটুকুই চিন্তা করেছি যে জাতির জন্য সারাটা জীবন আমার বাবা সংগ্রাম করেছেন, জেল-জুলুম-অত্যাচার সহ্য করেছেন। তার নিজের জীবনের কোনো চাওয়া-পাওয়া ছিল না। সম্পূর্ণভাবে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন দেশের মানুষের জন্য। আর সেই মানুষগুলো স্বাধীনতা পাওয়ার পর ভাগ্যহারা থাকবে, কষ্ট ভোগ করবে, বুভুক্ষ থাকবে, ক্ষুধার অন্ন জোগাতে পারবে না, চিকিৎসা পাবে না, শিক্ষা পাবে না, উন্নত জীবন পাবে না— এটা হতে পারে না। এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা এবং তাদের জীবনটা উন্নত করা— এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। সেজন্য যা কিছু প্রয়োজন, করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমরা অনেক ক্ষেত্রে পেছনে পড়ে গিয়েছিলাম। বাংলাদেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রে নার্সদের শুধু ডিপ্লোমা নার্সিং ছিল, গ্র্যাজুয়েশন ছিল না। ’৭৫ সালের পর ২১ বছর যারা সরকার পরিচালনা করেছিল, একে তো অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, তারপর ক্ষমতাটা তাদের কাছে ছিল একটা ভোগের বস্তু। দেশের মানুষের কল্যাণ করার কথা তারা কখনো চিন্তা করেনি। এটাই সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয়। আমরা সরকারে আসার পর থেকে এসব বিষয়ে উদ্যোগ নিতে শুরু করি।

তার সরকার বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত যখন ক্ষমতায় আসে, তাদের একটা কাজই ছিল— আমরা যা কিছু করেছি, সবকিছু বাতিল করে দেওয়া বা সেগুলো স্থগিত রাখা। ঠিক সেরকম একটা সমস্যায় পড়ে গিয়েছিল। যা হোক আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সেগুলো আবার বাস্তবায়িত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিটি জেলায় সরকারি অথবা বেসরকারি উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি, মেডিকেল কলেজ করে দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছি, উন্নত মানের হাসপাতাল করে দিচ্ছি। ডাক্তার-নার্স নিয়োগ দিয়েছি। করোনাভাইরাস যখন এসেছে, করোনাভাইরাস মোকাবেবিলা করার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে সাত দিনের মধ্যে ২ হাজার ডাক্তার, ৬ হাজার নার্স-টেকনিশিয়ান নিয়োগ দিয়েছি। ভবিষ্যতে আরও নিয়োগের পদক্ষেপ নিয়েছি। লক্ষ্য একটাই, যেন আমাদের দেশের মানুষ অন্তত এই চিকিৎসাটা পায়। করোনাভাইরাস মোকাবিলা করার জন্য যা যা করা দরকার, আমরা তা করে যাচ্ছি, চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের পদক্ষেপের ফলে করোনাভাইরাস অনেকটা নিয়ন্ত্রণে।

দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরে থাকতে হবে, হাত ধুতে হবে, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। যারা ভ্যাকসিন নিচ্ছি, সঙ্গে সঙ্গে যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। তাহলে আমরা আশা করি আমাদের দেশ থেকে এই প্রাদুর্ভাব পুরোপুরি চলে যাবে।

নারায়ণগঞ্জের কুমুদিনী কমপ্লেক্স প্রান্তে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব প্রসাদ সাহা। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান, পরিচালক শ্রীমতি সাহা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/একেএম

করোনাভাইরাস করোনাভ্যাকসিন কুমুদিনী ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড ক্যানসার রিসার্চ কোভিড-১৯ টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

গুলশানে দুইজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১২:৫৫

ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:৩৩

সম্পর্কিত খবর