ঢাকা: পরিষ্কার পরিচ্ছতার পেছনে দেশের জনগণের খরচ কত তা খুঁজে বের করবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এ জন্য খাবার পানি, পয়ঃব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যবিধি (ওয়াশ) ব্যয় জরিপ-২০২১ পরিচালনা করবে সংস্থাটি।
কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপট এবং বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রথমবারের মতো এ খাতে পূর্ণাঙ্গ এবং পৃথক একটি জরিপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে ওয়াটার এইড।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এবার মোবাইলের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। জরিপের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে রোববার অনুষ্ঠিত হয় বিভাগীয় সমন্বয়কারী ও মাস্টার ট্রেইনারদের তিনদিন ব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
রাজধানীর আগারগাঁও এ অবস্থিত পরিসংখ্যান ভবন সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ মেসবাহুল আলম এবং ওয়াটার এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হাসিন জাহান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিবিএস এর উপপরিচালক ও জরিপের ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো.আলমগীর হোসেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, যথাযথ পরিকল্পনা, নীতি-নির্ধারণ এবং প্রমাণভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য ওয়াশখাতের সার্বিক ব্যয়ের একটি সমন্বিত চিত্র প্রয়োজন। এ জন্য এ জরিপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর প্রধান সুফল হচ্ছে ওয়াশখাতের স্বচ্ছতা আরও বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া উপখাতসমূহ এবং ভৌগোলিক অঞ্চলসমুহের মধ্যে প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যয় বিভাজন পরীবীক্ষণ সহজ হবে। অর্থায়ন কৌশল বাস্তবায়নের গতিপ্রকৃতি পরিবীক্ষণের সক্ষমতা তৈরি হবে। ওয়াশ খাতের উন্নয়নে সক্রিয় সংস্থাসমুহের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন অনুসরণ করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, ২০২টি নমুনা এলাকা থেকে ৫ হাজার ৫০টি খানা (পরিবার) থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। এরমধ্যে শহর এলাকার ১০১টি নমুনা এলাকার ২ হাজার ৫২৫টি খানা এবং পল্লী এলাকার ২ হাজার ৫২৫টি খানা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। জরিপটি সফল করতে আগামী ১৮-২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সুপারভাইজিং কর্মকর্তা এবং তথ্য সংগ্রহকারীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
জরিপের মাধ্যমে প্রধান প্রধান যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হবে সেগুলো হলো খানা সদস্য সম্পর্কিত তথ্য, খানার বৈশিষ্ট্য, খানার আয় ও ব্যয় এবং পানি, পয়ঃব্যবস্থাপনা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সুবিধা ও ব্যয়সমুহ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, ‘ওয়াশ কার্যক্রম এদেশে বহুদিন ধরেই চলছে। কিন্তু আমরা কোনো অবস্থানে আছি সেটি পুরোটাই জানি না। এ জরিপের মাধ্যমে এ খাতে ব্যয়ের একটি সার্বিক চিত্র উঠে আসবে। নিয়মিত এ ধরনের জরিপ পরিচালনার প্রয়োজন হলেও সেটি সম্ভব হয় না। তথ্য এমনভাবে তুলে আনতে হবে যেন এ খাতের সবগুলো খরচ আলাদাভাবে উঠে আসে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে হাসিন জাহান বলেন, ‘সঠিক তথ্য ছাড়া কোন পরিকল্পা করা যায় না। এই জরিপে সাবান, পানি, হারপিকসহ এ ধরওে ক্ষেত্রে কি পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় তার চিত্র উঠে আসবে।’
‘আমরা ব্যক্তিগতভাবে কত ব্যয় করছি আর সরকার কি রকম ব্যয় করছে সে তথ্যও জানা যাবে। কোভিডের মধ্যে সাবান ও পানির ব্যবহার যেমন বেড়েছে, তেমনি এ খাতে খরচও বেড়েছে। কিন্তু সেই খরচ বহনের সাধ্য মানুষের আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে। এ জন্যই এ ধরনের জরিপের প্রয়োজন।’
বিবিএস মহাপরিচালক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘মাঠ থেকে সঠিক তথ্য তুলে আনতে হবে। যেন চূড়ান্ত ফলাফলও সঠিক হয়। শক্ত পরিকল্পনা তৈরি করতে হলে সঠিক পরিসংখ্যানের বিকল্প নেই।’