Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর চায় ৪ সংগঠনের জোট

সারাবাংলা ডেস্ক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৪:১৪

ঢাকা: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভাসানী অনুসারী পরিষদ; ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদ; গণসংহতি আন্দোলন ও রাষ্ট্রচিন্তা। ৪ সংগঠনের এই জোট ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর চায়’ বলে জানিয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তারা বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন, গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, বৈষম্যহীন গণতান্ত্রিক শিক্ষাব্যবস্থার দাবিতে ছাত্র আন্দোলন, ন্যায্য মজুরি ও মানবিক মর্যাদার দাবিতে শ্রমিক আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসনের জন্য ৬ দফার আন্দোলন এবং শ্রমিক-কৃষক-মেহনতি মানুষের মুক্তির দাবিতে ছাত্রদের ১১ দফার ভিত্তিতে গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরেই এসেছে মুক্তিযুদ্ধ। এদেশের শ্রমিক-কৃষক-ছাত্র-চাকুরিজিবি-ব্যবসায়ী-নারী-পুরুষের সম্মিলিত সংগ্রাম, জীবনদান আর ত্যাগের বিনিময়ে এসেছে আমাদের স্বাধীনতা।’

‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা এক দীর্ঘ ধারাবাহিক সংগ্রাম, লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন কেড়ে নেওয়া এক জনযুদ্ধের ফসল। একটা সামান্য বিরোধিতাকারী অংশ ছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ বাংলাদেশের জনগণের প্রায় সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বা সহায়তাকারী। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধ শুধুমাত্র একটি ভূখণ্ড মুক্ত করার স্বাধীনতা যুদ্ধ নয়; মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে ও ব্যাপক জনগণের সচেতন অংশগ্রহণে সংগঠিত একটি জনযুদ্ধ’, বলেও জানান তারা।

বক্তারা বলেন, ‘পাকিস্তান রাষ্ট্রের যেসব বৈশিষ্ট্যের কারণে তার বিরুদ্ধে এদেশের জনগণ দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম করেছেন, প্রাণ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত করেছেন কার্যত তার প্রায় সবকটি বৈশিষ্ট্যই নতুনরূপে হাজির আছে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে। স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা, সম্পদ পাচার, বিপুল বৈষম্য, জনগণকে উপনিবেশিক কায়দায় নিয়ন্ত্রণ, গণবিরোধী শাসন- এর সবকটিই আজও বহাল রয়েছে, ক্ষেত্র বিশেষে এসব নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর হয়েছে। বহাল আছে ব্রিটিশ ও পাকিস্তানি উপনিবেশিক নিবর্তনমূলক ও সম্পদ পাচারের অনুকূল আইন-কানুন। সর্বোপরি স্বাধীন বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ব্রিটিশ ও পাকিস্তানী উপনিবেশিক ব্যবস্থার অনুরূপ জবাবদিহিতাহীন, এককেন্দ্রিক ও একব্যক্তিকেন্দ্রিক ক্ষমতা কাঠামো। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আমরা দেখতে পাচ্ছি জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’

৪ সংগঠনের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘আজ সময় এসেছে আমাদের পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মেলাবার। জনগণের ত্যাগ ও গৌরবের মুক্তিযুদ্ধকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে আনার। আমরা সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণায় যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, যার ওপর ভিত্তি করে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে সেটাই হলো আমাদের পাওয়া না পাওয়ার হিসাব মেলানোর নিক্তি বা মানদণ্ড। আগামীর বাংলাদেশকে এই ঘোষণার ভিত্তিতেই আমরা গঠন করতে চাই।’

এসময় বেশ কয়েকটি সংস্কারের কথা বলা হয় সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে। সেই লক্ষ্যে, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আগামী ১ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা ও বিভাগীয় শহরগুলোসহ সারাদেশে সভা-সমাবেশ-মিটিং মিছিলসহ বিভিন্নভাবে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরা, বক্তব্যের পক্ষে জনগণকে সংগঠিত করার কথাও বলা হয়।

মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ৪ সংগঠনের নেওয়া কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১ মার্চ, মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা, ১২ মার্চ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সুবর্ণজয়ন্তী সমাবেশ, ২৬ মার্চ, স্ব স্ব সংগঠনের উদ্যোগে স্বাধীনতা দিবস পালন, ১০ এপ্রিল, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দিবস পালন। এছাড়াও দেশব্যাপী বছরজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।

সবশেষে আবারও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের অঙ্গীকার ‘সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায় বিচার’-এর নীতিতে একটি মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের কাজে ভূমিকা নেওয়ার জন্য সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু; গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি; ছাত্র, যুব ও শ্রমিক অধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর ও রাষ্ট্রচিন্তা’র পক্ষে হাসনাত কাইয়ুমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এমও

৪ সংগঠনের জোট জোনায়েদ সাকি ভাসানী অনুসারী পরিষদ ভিপি নুরুল হক নুর রাষ্ট্রচিন্তা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর