৩৭ বছরে মাত্র ১ লাখ কর্মী বিদেশে পাঠিয়েছে বোয়েসেল!
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:১৩
ঢাকা: বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল) রাষ্ট্র মালিকানাধীন একমাত্র জনশক্তি রফতানিকারী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্রতিষ্ঠার ৩৭ বছরে মাত্র এক লাখ কর্মী পাঠাতে পেরেছে বোয়েসেল। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যাপ্ত জনবল ও সদিচ্ছার অভাবেই লাভজনক থাকার পরও প্রতিষ্ঠানটির কর্মকাণ্ড সন্তোষজনক নয়। যদিও বোয়েসলের কর্মকর্তারা বলছেন, তারা নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন।
স্বচ্ছতা বজায় রেখে সবচেয়ে কম খরচে, সঠিক কাজে বৈধ উপায়ে বিদেশে কর্মী পাঠানোর মাধ্যমে পারস্পারিক বিশ্বাস অর্জন এবং সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৮৪ সালে বোয়েসেল যাত্রা শুরু করে। কিন্তু গত ৩৭ বছরে মাত্র এক লাখ এক হাজার কর্মী পাঠাতে পেরেছে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি, যা কোনো বেসরকারি এজেন্সি এক বছরে পাঠিয়ে থাকে। বোয়েসেল এ পর্যন্ত যাদের বিদেশ পাঠিয়েছে তাদের মধ্যে দক্ষ, কম দক্ষ এবং অদক্ষ কর্মীও রয়েছে বলে জানা গেছে।
বোয়েসেল সূত্র জানায়, জর্ডান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিশেলস ও মরিশাস এই চার দেশেই বোয়েসেল এক চেটিয়াভাবে কর্মী পাঠায়। গত বছর ৮ হাজার ৫২৫ জন কর্মী পাঠাতে পেরেছে সরকারি এই এজেন্সি। বোয়েসেলের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গেল ৩৭ বছরে ১০৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লাভে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সেক্ষেত্রে বোয়েসেলের কার্যক্রম আরও বাড়ানো দরকার বলে মনে করছেন অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা।
অভিবাসী কর্মী উন্নয়ন প্রোগ্রামের (ওকাপ) চেয়ারম্যান শাকিরুল ইসলাম বলেন, ‘বোয়েসেলের পর্যাপ্ত জনবল নেই। রাজধানী ঢাকা ছাড়া তাদের কোথাও কোনো শাখাও নেই। ফলে অনেক মানুষ সরকারের এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানেই না। এ নিয়ে সরকারের প্রচারণাও নেই। অথচ প্রতিষ্ঠানটি লাভে রয়েছে। এর কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়ানো দরকার।’
বোয়েসেলের কার্যক্রম বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) মহাপরিচালক মো. শামছুল আলমও। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি এজেন্সি যদি ৫০০ লোক পাঠায় তবে সরকারি এজেন্সিকে কম খরচে হাজার লোক পাঠানো উচিত। সরকারি আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা এক নয়।’
এ প্রসঙ্গে বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল হাসান বাদল বলেন, ‘সরকারিভাবে সবচেয়ে বেশি কর্মী সাউথ কোরিয়াতে পাঠানো হয়েছে। সাউথ কোরিয়ায় এ পর্যন্ত ২১ হাজার কর্মী পাঠানো হয়ছে। তারা এখন সচ্ছল জীবন যাপন করছেন।’
তিনি বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে বোয়েসেলের কোনো অবকাঠামো নেই। ভবিষ্যতে যদি কর্মী বাড়িয়ে কাজের পরিধি বৃদ্ধি করা যায় তবে ব্যাপক হারে কর্মী পাঠানো যাবে। এতে বোয়েসেল আরও লাভজনক অবস্থানে গিয়ে দাঁড়াবে। এবং বাংলাদেশ থেকে বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠিয়ে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।’
সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম