বরিশাল: আর মাত্র চারদিন পরেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহিদ দিবস। যথাযোগ্য মর্যাদায় সারাবিশ্বে এই দিনটি পালন করা হলেও অযত্ন ও অবহেলায় পড়ে আছে বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়নের রাহুতকাঠি বন্দর সংলগ্ন শহীদ মিনারটি।
এক যুগ আগে ভাষা শহিদদের স্মরণে স্থানীয় বন্দর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে নির্মিত হয় একটি পাকা শহিদ মিনার। কিন্তু নির্মাণের পর থেকেই রক্ষণাবেক্ষণ আর অযত্ন-অবহেলায় শহিদ মিনারটি এখন পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি এলে কোনো রকম পরিষ্কার করা হলেও পরদিন থেকেই বাজারের সমস্ত ময়লা আবর্জনা এখানে ফেলা শুরু হয়। শহিদ মিনারের বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ ও দ্রুত রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়েছেন সাংস্কৃতিককর্মীসহ উপজেলার বিশিষ্টজনেরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী রাহুতকাঠি বাজারের (সাবেক শিকারপুর ফেরিঘাট) প্রবেশদ্বারের বামপাশেই পাবলিক টয়লেট ঘেঁষে নির্মাণ করা হয়েছে শহিদ মিনারটি। মিনারের চারপাশ ও মিনারের ওপরে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ। নানা ধরনের ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে সাধারণ মানুষের চলাফেরা বিঘ্নিত হওয়ায় বেওয়ারিশ কুকুরের একমাত্র রাত্রিযাপনের স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে শহিদ মিনারটি।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল করিম হাওলাদারসহ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ভাষা শহিদদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা মাতৃভাষা বাংলা পেয়েছি। আর ভাষা শহীদদের স্মৃতি ও আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ পাড়া-মহল্লায় ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে শহিদ মিনার তৈরি করা হয়। শহিদ মিনার শুধু একদিন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য নয়। শহিদ মিনার এভাবে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হলে এ প্রজন্মের কাছে শহীদ মিনারের গুরুত্ব কমে যাবে।
বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি এর আগে কেউ আমাকে জানায়নি। শহিদ মিনার রক্ষণাবেক্ষণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’