শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা: ১০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল

ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া ১০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের বেঞ্চ আসামিদের সাজা বহাল রেখে এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের রায়ে ১৪ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সরোয়ার হোসেন মিয়াকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।

এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি মামলার ডেথ রেফারেন্স অনুমোদন ও আসামিদের করা আপিল শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য্য করেন আদালত।

আলোচিত এই হত্যা চেষ্টা মামলার রায় বাংলায় দিয়েছেন আদালত। ডেথ রেফারেন্স অনুমোদন ও আপিল শুনানি শেষে আদালত বলেছিলেন, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভাষার মাসের সম্মানে বাংলায় রায় দেব।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত দেবনাথ ও মো. বশির উল্লাহ, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মিজানুর রহমান খান শাহীন ও মো. শাহীন আহমেদ মৃধা। আসামিপক্ষে ছিলেন এস এম শাহজাহান, মোহাম্মদ আহসান, মো. নাসির উদ্দিন ও অমূল্য কুমার সরকার (রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী)।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ২০১৭ সালের ২০ আগস্ট ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। এছাড়াও চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ মামলার রায়সহ সব নথি ওই বছরের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরিভিত্তিতে পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। মামলাটি শুনানির জন্য প্রস্তুত শেষে কার্যতালিকায় দেওয়া হয়।

মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ওয়াসিম আকতার, রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর। এ ছাড়া মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। আনিসুল ওরফে আনিস ও মো. মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমানকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলের পাশে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়। শেখ লুৎফর রহমান মহাবিদ্যালয়ের উত্তর পাশের একটি চায়ের দোকানের পেছনে এ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। এ ঘটনায় তৎকালীন কোটালীপাড়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূর হোসেন মামলা করেন। ২০০১ সালের ৮ এপ্রিল ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। পরে ২০০৯ সালের ২৯ জুন আরও নয়জনকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।

এরপর ২০১০ সালে মামলাটি নিষ্পত্তির জন্য ঢাকা-২ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। সেখানে এই মামলার বিচার সম্পন্ন হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/এএম

শেখ হাসিনা হত্যাচেষ্টা