প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির সমাবেশ, আসেননি শীর্ষ নেতারা
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:৩০
ঢাকা: জিয়াউর রহমানের খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিএনপি। তবে ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ-উত্তর) বিএনপি আয়োজিত এ সমাবেশে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং ভাইস চেয়ারম্যান পর্যায়ের কেউ ছিলেন না। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে চেয়ারপারসনের দুইজন উপদেষ্টা, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও একজন যুগ্ম মহাসচিব উপস্থিত ছিলেন।
বুধবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ১০ টায় শুরু হওয়া এ সমাবেশ ঘিরে পুলিশ ছিল কঠোর অবস্থানে। প্রেস ক্লাবের সমানের সড়কের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে ব্যারিকেড তৈরি করে রাখে পুলিশ সদস্যরা। সমাবেশস্থলে আসার সময় বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকদের দেহ তল্লাশি করে তারা। এ সময় কয়েকজনকে আটকও করা হয়। পরিচয়পত্র দেখিয়ে সমাবেশস্থলে ঢুকতে হয় সাংবাদিকদের।
গত সমাবেশে পুলিশের হাত থেকে দলীয়কর্মী ছিনিয়ে নিয়ে আলোচনায় আসা ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী প্রোকৌশলী ইশরাক হোসেনও আসেননি আজকের সমাবেশে। গত সমাবেশের প্রধান অতিথি ড. খন্দকার মোশররফ হোসেন, বিশেষ অতিথি গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, পুলিশের পিটুনির শিকার দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেনও আসেননি আজকের সমাবেশে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান, সিনিয়র যুগ্ম রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিম উদ্দীন আলাল, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোস্তাফিজুর রহমান, ফখরুল ইসলাম রবিন, নিপুণ রায় চৌধুরী প্রমুখ।
আব্দুস সালাম বলেন, ‘জিয়াউর রহমানে খেতাব কারও দয়ায় পাওয়া নয়। এটা তিনি অর্জন করেছেন। এ দেশের জনগণ তাকে এই খেতাব দিয়েছে। এটি কেড়ে নেওয়ার এখতিয়ার কারও নেই। সরকারকে আমি অনুরোধ করব, এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন না, যাতে করে আগামী দিনে বিএনপির সঙ্গে আপনাদেরকেও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য মাঠে নামতে হয়।’
আমান উল্লাহ আমান বলেন, ‘এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই, এই সরকারের সঙ্গে জনগণ নেই। এ জন্যই জনগণকে ভয় পায়। এই সরকার বিচারবিভাগ ধ্বংস করে দিয়েছে, এই সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে দিয়েছে। সরকার প্রধান থেকে শুরু করে, যারা মন্ত্রীপরিষদে রয়েছে, এমপি রয়েছে— তারা সবাই লুটপাট করছে।’
‘নব্বয়ের চেতনায় একটি গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে উৎখাত করতে হবে। এই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে আবার জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা এই সরকারকে আর কোনো নির্বাচনের সুযোগ দেব না। আবার ভোট ডাকাতি করে ক্ষমতায় আসবেন?— এটা বাংলাদেশে হতে পারে না। তাই সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে আন্দোলন করে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে’— বলেন আমান উল্লাহ আমান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘যে শাহজাহান খান আজ জিয়াউর রহমানের খেতাব কেড়ে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, ক্ষমতার পটপরিবর্তন হলে, সেই শাহজহান খান কেবল খেতাব নয়, প্রধানমন্ত্রীর জীবনের জন্য হুমকিও হতে পারে। কারণ, ৭২-৭৫ আওয়ামী লীগের লোকজনদের খুঁজে খুঁজে মেরেছে এই শাহজাহান খান। কারণ, তিনি তো গণবাহিনীর নেতা।’
‘যে লোকের কোনো সভ্যতা, ভদ্রতা, নম্রতা জানা নেই, সেই শাহজাহান খান ‘খেতাব’ কেড়ে নেবে না তো কে কেড়ে নেবে? ডাকাতের কোনো মনুষত্ব থাকে? তো শাহজাহান খানের মতো একজন ডাকাত জিয়াউর রহমানে খেতাব তো কেড়ে নেবেই’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
সারাবাংলা/এজেড/এএম