নম্বর কম দেওয়ায় পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে বেরোবি শিক্ষকে অব্যাহতি
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:২৭
রংপুর: শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নম্বর কম দেওয়ার অভিযোগে পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি পেলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মৌটুসী রায়।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি নির্ধারণী ফোরামের ৭৬তম সিন্ডিকেটে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. সরিফা সালোয়া ডিনা।
তিনি বলেন, ‘পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত মৌটুসী রায় বিভাগের কোনো পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে যোগ দিতে পারবেন না।’
এর আগে, গত ৮ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ৪০২ নম্বর কোর্সের ‘ট্রান্সলেনস স্টাডিজ’ বিষয়ের ৫০ নম্বরের কন্টিনিয়াস ফলাফল প্রকাশ করেন মৌটুসী রায়। ফল প্রকাশের পর ওই ব্যাচের শিক্ষার্থীরা সেদিন রাতেই কোর্স শিক্ষক মোটুসী রায়ের বিরুদ্ধে কম নম্বর দেওয়ার অভিযোগ তুলে তার মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে গণআত্মহত্যার হুমকি দেয়। তার কিছুক্ষণ পরেই ওই ব্যাচের তিন শিক্ষার্থী নাম উল্লেখ করে মধ্যরাতে নিরাপত্তা চেয়ে তাজহাট থানায় সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন ওই শিক্ষিকা। নম্বর কম দেওয়া থেকে পরিত্রাণ এবং শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে জিডি প্রত্যাহারের দাবিতে পরদিন বিভাগের সামনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চলাকালীন চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক গোলাম রাব্বানীকে আহ্বায়ক, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশিদ এবং রসায়ন বিভাগের প্রধান তানিয়া তোফাজকে সদস্য করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে একাডেমিক কাউন্সিল। তদন্ত কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে কোর্স শিক্ষক মৌটুসী রায়কে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ফলাফল পুনঃমূল্যায়ন করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টিও সুপারিশে উঠে আসে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে।
এ বিষয়ে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষক মোটুসী রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কোর্স শিক্ষক হিসেবে গত ৮ ফেব্রুয়ারি ইংরেজি বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফলাফল প্রকাশের পর প্রায় সকলেই আমার মোবাইল ফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে আত্মহত্যা ও আন্দোলনের হুমকি দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে পরামর্শ করে বিভাগের দুই শিক্ষক আলী রায়হান সরকার, কাশফিয়া ইয়াসমীন অন্বা এবং উপাচার্যের পিএ আবুল কালাম আজাদকে সঙ্গে নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করি।’
তবে তাকে পরীক্ষা সংশ্লিষ্ট বিষয় থেকে অব্যাহতির বিষয়টি তিনি জানেন না বলে জানান।
সারাবাংলা/একে