৫ লাখ মৎস খামারিকে আর্থিক প্রণোদনা দিয়েছে সরকার
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:১০
ঢাকা: মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দেশের প্রায় সব খাতই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এমন ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৪৭৬ জন হাজার জন খামারিকে প্রণোদনা দিয়েছে সরকার। তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মোট ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ ৪১ হাজার ২৫০ টাকা নগদ প্রণোদনা।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের আর্থিক প্রণোদনা প্রদান অনুষ্ঠানে খামারিদের নগদ, বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে প্রণোদনার অর্থ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে প্রণোদনা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কৃষি খাতে উন্নয়ন হলে দেশের সার্বিক উন্নয়ন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের বিগত তিন মেয়াদে কৃষির সব খাতেই উৎপাদন বেড়েছে। এখন আমাদের চ্যালেঞ্জ হলো পুষ্টিজাতীয় খাবারের নিশ্চয়তা দেওয়া। পুষ্টিসম্মত খাবারের জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ লক্ষ্যেই এ খাতে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের দেশের মূল শক্তি জনগণের পরিশ্রম। তাদের উঠে দাঁড়াবার ক্ষমতা বারবার পরীক্ষিত। এ জন্য করোনা আমাদের তুলনামূলকভাবে তেমন ক্ষতি করতে পারেনি। করোনার মধ্যেও আমরা প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের যেকোনো কাজ শেখ হাসিনা সরকারের উচ্চ অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে বলেও এসময় মন্তব্য করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী।
সভাপতির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অপ্রতিরোধ্য গতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। সব দুর্যোগ মোকাবেলা করে দেশের মানুষকে ভালো রাখার জন্য শেখ হাসিনা অবিরাম পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তারই নির্দেশনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় পাঁচ লাখ খামারিকে তাদের নির্ধারিত মোবাইল নম্বরে আমরা নগদ প্রণোদনা পৌঁছে দিয়েছি। আরও প্রায় দুই লাখ খামারিকে প্রণোদনা দেওয়ার বিষয়ে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। এটা আমরা যাচাই-বাছাই করছি, যেন কোনোভাবে মধ্যস্বত্বভোগীরা প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদের জন্য শেখ হাসিনার এ প্রণোদনা সহায়তা নষ্ট করতে না পারে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এবং বাংলাদেশে বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্চি মিয়াং টেম্বন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন এলাকার মৎস খামারিরাও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যুক্ত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের ‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন’ এবং মৎস্য অধিদফতরের ‘সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ’ প্রকল্প দু’টির আওতায় এই খাতের খামারিদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দেশের ৪৬৬টি উপজেলা থেকে প্রাণিসম্পদ খাতের ৪ লাখ ৭ হাজার ৪০২ জন খামারিকে (ডেইরি, লেয়ার মুরগি, পোল্ট্রি মুরগি, সোনালি মুরগি, ব্রয়লার মুরগি ও হাঁস খামারি) ১৫টি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন হারে ৪৬৮ কোটি ৮৬ লাখ ৪১ হাজার ২৫০ টাকা এবং ৭৫টি উপজেলা থেকে মৎস্য খাতের ৭৮ হাজার ৭৪ জন খামারিকে (মৎস্য চাষি, চিংড়ি চাষি ও কাঁকড়া/কুঁচিয়া সংগ্রাহক) সাতটি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন হারে ১০০ কোটি টাকা প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর
আর্থিক প্রণোদনা কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক খামারিদের প্রণোদনা পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী