করোনা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ কি সুবিধাজনক অবস্থায়?
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:৩১
ঢাকা: ২০২০ সালের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো তিন জন ব্যক্তির মাঝে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্ত হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশে সংক্রমণের হার বাড়তে থাকে। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে মৃত্যু সংখ্যাও, তবে সেটা বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় শতাংশ বিবেচনায় কম।
প্রথম সংক্রমণ শনাক্তের পর বাংলাদেশে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কেটে গেছে ৪৯টি সপ্তাহ ও তিন দিন। প্রথম শনাক্তের পর ষষ্ঠ সপ্তাহে (১২ থেকে ১৮ এপ্রিল) দেশে সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের ওপরে পৌঁছায়। পরবর্তীতে তা বাড়তে থাকলেও ১০ শতাংশের নিচে নেমে আসে ৪১তম সপ্তাহে (১৩ থেকে ১৯ ডিসেম্বর)। তবে ১৪ জানুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ সপ্তাহ সময় বিবেচনা করলে দেখা যায়, সংক্রমণের হার এই সময়ে ধারাবাহিকভাবে পাঁচ শতাংশের নিচে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার যেকোনো মহামারি নিয়ন্ত্রণের সংজ্ঞা অনুযায়ী, যদি কোনো স্থানে সংক্রমণের হার টানা তিন থেকে চার সপ্তাহ ৫ শতাংশের নিচে থাকে তবে সে পরিস্থিতিকে রোগের নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় থাকা বলা যেতে পারে। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাপদ বলা না গেলেও মহামারি নিয়ন্ত্রণে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা বলা যেতে পারে বলেও মনে করছেন দেশের বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে মহামারি নয় বরং সংক্রমণের ধারাবাহিক হার কমে আসার ফলে প্যানডেমিক পর্যায়ে চলে এসেছে বলেও মনে করছেন তারা।
একইসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মতামত, যেহেতু দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমও শুরু হয়েছে তাই সংক্রমণের এই হার কমে আসায় বাংলাদেশ করোনা মোকাবিলায় সুবিধাজনক স্থানে আছে- এমনটা বলা যেতেই পারে। তবে এক্ষেত্রে সংক্রমণের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে শুরু করে দেশের সকলকে সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে মাস্ক পরে চলতে হবে এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে।
সংক্রমণের হার কমে আসার এই প্রবণতাকে নিম্মমুখী মেনে নিয়ে সবাইকে সতর্কতার পরিমাণ বাড়াতে হবে বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
সংক্রমণ পরিস্থিতি
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো করোনা সংক্রমণ তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বাংলাদেশে বিগত পাঁচ সপ্তাহ ধরে সংক্রমণের আনুপাতিক হার তিন দশমিক ৪৪৮ শতাংশ। এসময়ে দেশে মারা গেছেন ৪৮১ জন যা সংক্রমণ শনাক্ত অনুপাতে দুই দশমিক ৮৬১ শতাংশ।
দেশে ১৪ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই সপ্তাহে ৯৯ হাজার ১৬১টি নমুনা পরীক্ষা করে চার হাজার ৭৭৭ জনের মাঝে সংক্রমণ পাওয়া যায়। এসময় নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ছিল চার দশমিক ৮১৭ শতাংশ এবং আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১১৭ জন। শনাক্ত অনুপাতে এই সপ্তাহে মৃত্যু হার ছিল দুই দশমিক ৪৪৯ শতাংশ।
দেশে ২১ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই সপ্তাহে ৯৯ হাজার ৮৪১ টি নমুনা পরীক্ষা করে তিন হাজার ৭৫৭ জনের মাঝে সংক্রমণ পাওয়া যায়। এসময়ে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ছিল তিন দশমিক ৭৬৩ শতাংশ এবং আক্রান্ত হয়ে মারা যান ১২২ জন। শনাক্ত অনুপাতে এই সপ্তাহে মৃত্যু হার ছিল তিন দশমিক ২৪৭ শতাংশ।
দেশে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় এই সপ্তাহে ৯৩ হাজার ১২৬টি নমুনা পরীক্ষা করে তিন হাজার ১০১ জনের মাঝে সংক্রমণ পাওয়া যায়। এসময়ে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ছিল তিন দশমিক ৩৩০ শতাংশ এবং আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৯০ জন। শনাক্ত অনুপাতে এই সপ্তাহে মৃত্যু হার ছিল দুই দশমিক ৯০২ শতাংশ।
দেশে ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই সপ্তাহে ৯৮ হাজার ৬০৭টি নমুনা পরীক্ষা করে দুই হাজার ৬০৮ জনের মাঝে সংক্রমণ পাওয়া যায়। এসময়ে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ছিল দুই দশমিক ৬৪৫ শতাংশ এবং আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৭৭ জন। শনাক্ত অনুপাতে এই সপ্তাহে মৃত্যু হার ছিল দুই দশমিক ৭৫৩ শতাংশ।
দেশে ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই সপ্তাহে এক লাখ এক হাজার ৪১৩টি নমুনা পরীক্ষা করে দুই হাজার ৭২৪ জনের মাঝে সংক্রমণ পাওয়া যায়। এসময়ে নমুনা পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ছিল দুই দশমিক ৬৮৬ শতাংশ এবং আক্রান্ত হয়ে মারা যান ৭৫ জন। শনাক্ত অনুপাতে এই সপ্তাহে মৃত্যু হার ছিল দুই দশমিক ৭৫৩ শতাংশ।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন
দেশে কোভিড প্রতিরোধ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সদস্য ও ভাইরোলজিস্ট ডা. নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, সংক্রমণের হার কমে এলে সেটি দেশের জন্য ভালো। কিন্তু তাতেও রিল্যাক্স হওয়া যাবে না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী সংক্রমণের হার টানা ৫ শতাংশের কম হলেই সেটাকে পেনডেমিক স্টেজ বলা যায় , সেখানে আমরা ২ শতাংশের ঘরে চলে এসেছি। সুতরাং ধরে নিতে পারি আমরা করোনা নিয়ন্ত্রণে অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। এই অবস্থায় প্যানডেমিকের পরিবর্তে এন্ডেমিক হয়ে দাঁড়াবে রোগের অবস্থা। আমরা ১৫ ডিসেম্বরের পর থেকে দেশে সংক্রমণের হার কমতে দেখছি। গত পাঁচ সপ্তাহেও দেশে শনাক্তের হার ছিল পাঁচ শতাংশের নিচে। তবে এই অবস্থাকে সতর্কভাবে পর্যালোচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে সাধারণত শীতকালে কিছু ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা যায়। সেগুলো আগেও আমাদের দেশে দেখা যেত বিভিন্ন রূপে। যেমন শিশুদের নিউমোনিয়া থেকে শুরু করে সর্দি-কাশি টাইপের কিছু রেসপেরেটরি ভাইরাস বছরজুড়েই দেখা গেলেও শীতকালে একটু বেশিই দেখা যায়। এক্ষেত্রে দেখা যায় গরম এলে এই রেসপেরেটরি সিস্টেমগুলো পরিবর্তন হতে থাকে। মৌসুম পরিবর্তনের এই সময়ে মানুষের শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায়। এক্ষেত্রে হয়তোবা অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় আমাদের শরীরে সেই কমন ভাইরাসগুলো ইতোমধ্যেই রেসপেরেটরি ট্র্যাকগুলো দখল করে আছে। সেজন্য নতুনভাবে আর কোভিড-১৯ ভাইরাস প্রবেশ করতে পারছে না। তবে এটাও কিন্তু নিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে সংক্রমণের বর্তমান হার দেখেও আমাদের রিল্যাক্স না হয়ে বরং সবাইকে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে। যারা বয়োজ্যেষ্ঠ তারা সবাই ভ্যাকসিন নেবেন বলে আশা করি। কিন্তু সেজন্য সব জায়গায় ভালোভাবে ও সমন্বিতভাবে প্রচারণা চালাতে হবে। একদিকে যখন সংক্রমণের হার কমে আসছে তখন দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম যদি কার্যকরভাবে করা যায় তবে বলা যেতে পারে আমরা সুবিধাজনক অবস্থানে আছি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক এই উপাচার্য বলেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে দেখা গেছে মাস্ক পরার পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু এখনও রাজধানীর বাইরে অধিকাংশ স্থানে মাস্ক ছাড়াই সবাই ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটি বিপদজনক। ভ্যাকসিন নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, আমরা হয়তবা বলতে পারি যে শনাক্তের হার বা সংক্রমণের তীব্রতা কমে আসছে কিন্তু এটা যে বাড়বে না সে বিষয়ে কিন্তু কোনো নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। তাই সাবধানতা অবলম্বন জরুরি। একই সঙ্গে সেই পুরনো তিনটি বিষয় মেনে চলতেই হবে– স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, হাত ধোঁয়ার অভ্যাস চালু রাখা ও মাস্ক ব্যবহার করা।
আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) কার্যকরী সদস্য ডা. মোশতাক হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, দেশে সংক্রমণের হার কমে আসছে এটা সত্য। কিন্তু আমরা বিপদসীমা অতিক্রম করে ফেলেছি এমনটা বলা যাবে না। আজকে সংক্রমণ কম থাকলেও এটি কাল যে বাড়বে না, তার নিশ্চয়তা নেই। আমরা বিশ্বের কিছু দেশে দেখেছি যাদের সংক্রমণের হার একদম শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছিল। পরবর্তী সময়ে কিন্তু সেসব দেশে ফের সংক্রমণ বেড়েছে। তাই সংক্রমণের হার কমে যাওয়া নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করার অবকাশ নেই।
সংক্রমণ কমে আসলেও তা আবার বাড়তে পারে উল্লেখ করে ডা. মোশতাক হোসেন বলেন, থাইল্যান্ডে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি শুরু থেকে যদি দেখা হয় তবে সেখানে কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণে ছিল। পরে সেখানে সংক্রমণের হার বেড়ে যায়। ঠিক একইভাবে পূর্ব এশিয়ার অনেক দেশে সংক্রমণ শনাক্তের হার শূন্যের ঘরে চলে এসেছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই সেখানে আবার সংক্রমণ হার বাড়তে থাকে। একই অবস্থা দেখা গেছে যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলিতেও। সেখানে প্রায় শূন্য থেকে আবার সংক্রমণ বাড়তে থাকে। জাপান, নিউজিল্যান্ডের মতো দেশগুলিতেও করোনা সংক্রমণ শূন্য হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরে আবার সেখানেও রোগী পাওয়া গেছে। অর্থাৎ সংক্রমণ পরিস্থিতি কমে আসলে রিল্যাক্স হওয়ার কোনো উপায় নেই কোনো দেশের।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিন্তু সবসময়ই দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে সবাইকে সাবধান করছেন। এ বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সরকারি বিভিন্ন প্রচারণা ও সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের কারণে দেশে মাস্কের ব্যবহার বেড়েছে। এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। অনেকেই বলেছিলেন দেশে শীতকালীন সময়ে করোনার সংক্রমণের হার বাড়বে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে তেমন কিছুই হয়নি। এতে বোঝা যায়, আবহাওয়ার সঙ্গে করোনা সংক্রমণের কোনো সম্পর্ক তেমনভাবে নেই। তাই বছরব্যাপী সবাইকে সামাজিক দূরত্ব মেনে মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে চলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশে বর্তমানে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমও চলছে। আর তাই আমি মনে করি সকল বয়ষ্ক মানুষকে দ্রুত এই ভ্যাকসিনের আওতায় আনা উচিত। বস্তি পর্যায় থেকে শুরু করে ছিন্নমূল পর্যায়ের বয়ষ্কদেরও এই কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে। সংক্রমণের হার কমে আসার এই প্রবণতা যদি আমরা ধরে রাখতে পারি তবে বলা যেতে পারে সুবিধাজনক স্থানে যাচ্ছে দেশ।
দেশে সংক্রমণের হার কমে আসা বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর সারাবাংলাকে বলেন, বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও ধারাবাহিকভাবে সংক্রমণের হার কমে আসছে। এটা খুবই ভালো লক্ষণ। কিন্তু এসময় সবাইকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার অভ্যাস ধরে রাখতে হবে। কারণ মনে রাখতে হবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি কিন্তু পরিবর্তনশীল। যদি কোথাও সামান্যতম সংক্রমণও দেখা যায় তবে বিপদে পড়তে পারে পুরো দেশই।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম চলছে। সবাইকে ভ্যাকসিন নিতে হবে পর্যায়ক্রমে। ভ্যাকসিন নিলেও আমাদের সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। কারণ যদি কোনোভাবে সংক্রমণ আবার ব্যক্তিপর্যায়ে ছড়ানো শুরু হয় তবে তা একজনের থেকে আরেকজনে দ্রুত ছড়াতে পারে। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে যে সংজ্ঞা সেখানে স্থির থাকা যাবে না।
তবে সংক্রমণ তুলনামূলকভাবে কমলেও সতর্কতার ঘাটতি বিপদ ডেকে আনতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ডা. আলমগীর।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও গবেষণা) অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা সারাবাংলাকে বলেন, দেশে মানুষের মাঝে আগের চাইতে সচেতনতা অনেক বেড়েছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। এক্ষেত্রে আমরা সবাইকে আহ্বান জানিয়ে বলেছিলাম যাদের অন্যান্য রোগ আছে তারা যেন অবশ্যই কোভিড-১৯ উপসর্গ দেখা গেলে নমুনা পরীক্ষা করান। সেটি এখন আগের চাইতে অনেক বেড়েছে। একইসঙ্গে মাস্ক পরার হারও বেড়েছে। দেশের অধিকাংশ স্থানেই স্বাস্থ্য বিধি বিষয়ে সচেতনতামূলক কাজ করা হচ্ছে। আর এসব কিছু মিলিয়ে দেশে শনাক্তের হার কমে এসেছে।
তিনি বলেন, দেশে যেহেতু পর্যায়ক্রমে সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তাই সংক্রমণের হার আরও কমবে বলে আমরা আশা করতে পারি। কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কেউ কিন্তু বলতে পারবে না যে সংক্রমণ মুক্ত হয়ে গেছে। আর তাই ভ্যাকসিন নিলেও মাস্ক পড়তেই হবে, স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে, হাত ধোয়ার অভ্যাস চালু রাখতে হবে ও জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবেই।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে যদি এইসব কার্যক্রমগুলো ধরে রাখা যায় তবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে বলেও মনে করেন অধ্যাপক ফ্লোরা।
সারাবাংলা/এসবি/এসএসএ