Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বায়ান্নতে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা অপ্রকাশিত থাকা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২৩:০৩

ঢাকা: ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে প্রকাশ না করা জাতীয়ভাবে আমাদের ভুল ও রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ভাষা আন্দোলনেও বঙ্গবন্ধু প্রত্যক্ষভাবে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন। কিন্তু এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। সেই সুযোগে যারা ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকাকে খাটো করে দেখানোর অপচেষ্টা করেছেন, তারা অন্যায় করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১৯৪৮ সালে ঢাকায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ’র ‘উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ ঘোষণার প্রতিবাদে আন্দোলন সংগঠিত করার কারণেই ১১ মার্চ ১৯৪৮ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ১৫ মার্চ মুক্তি লাভ করে আবার পরদিন ১৬ মার্চ ভাষার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগ্রাম পরিষদের সভায় সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৪৯ সালে ডিসেম্বর মাসে তাকে গ্রেফতার করা হয়। একটানা ১৯৫২ সাল পর্যন্ত তিনি কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থেকেও তিনি কিন্তু বসে ছিলেন না। সেখান থেকেই তিনি ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করার দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। এমনকি জেলখানায় অনশনও করেছেন। এই বিষয়গুলো আসলে আগে কখনো জনসম্মুখে প্রকাশিত হয়নি। এগুলো অপ্রকাশিত রাখা একটি বড় অন্যায় ছিল।

ইতিহাস তুলে ধরে ড. হাছান বলেন, একটি কথা অনেকে জানে না— ১৯৫২ সালের পরে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু ১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করার আগ পর্যন্ত বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও সেটাকে কার্যকর করা হয়নি। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে সরকারি কার্যকরণে নিয়ে আসা হয়। রাষ্ট্রীয়ভাবে একুশে ফেব্রুয়ারি পালন, শহিদ মিনার সরকারিভাবে নির্মাণও তখনই শুরু হয়।

বিজ্ঞাপন

ভাষা আন্দোলনের ধারাবাহিকতাতেই বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধিকার আদায়ের সংগ্রাম ও পরবর্তী সময়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের পরিকল্পনা বঙ্গবন্ধু করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কখন কী বিষয় বলতে হয়, সেটি বঙ্গবন্ধু জানতেন। সেজন্যই বঙ্গবন্ধু রাজনীতির কবি। বঙ্গবন্ধু যদি ছেষট্টিতে ছয় দফা ঘোষণা না করে তার মনে থাকা স্বাধীনতার কথা বলতেন, তাহলে তো স্বাধীনতা আসতো না। তিনি ছয় দফা ঘোষণা করে স্বাধীনতার জন্য বাঙালির মনন তৈরি করেছেন। এরপর ধাপে ধাপে লড়াই-সংগ্রাম এগিয়ে নিয়ে যে সময়ে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রয়োজন ছিল, ঠিক সেই সময়েই স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। এভাবে বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন এবং স্বাধীনতা সংগ্রাম সংগঠিত করে বাঙালিকে স্বাধীন রাষ্ট্র উপহার দিয়েছেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে প্রেস ক্লাবের আন্তর্জাতিক  লিয়াঁজো উপকমিটির আহ্বায়ক আইয়ুব ভূঁইয়া সেমিনার সঞ্চালনা করেন। এতে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ, বাংলা একাডেমির সভাপতি ড. শামসুজ্জামান খান এবং প্রেস ক্লাবের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাঈনুল আলম আলোচনায় অংশ নেন। সেমিনারে ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও বাংলার বিশ্বব্যাপ্তি’ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর।

সারাবাংলা/জেআর/টিআর

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ভাষা আন্দোলন

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর