গুজব ছড়ানোর দায়ে মামলা করল নগদ

ঢাকা: সরকার ও সরকারি সেবার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর দায়ে অজ্ঞাতনামা ১০ হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা করল সরকারের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদ। বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার সিএমএম কোর্টে মামলাটি করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের মতো করে বিভিন্ন কৌশলে এবং খুবই গোপনীয়তার সঙ্গে দেশব্যাপী সরকার ও সরকারি সেবার বিরুদ্ধে বিভিন্ন লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। লিফলেটগুলোতে সরকারকে সরাসরি হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে। লিফলেটগুলোর সঙ্গে সম্প্রতি আল জাজিরা টেলিভিশনের প্রচারিত বিভ্রান্তিকর প্রতিবেদনের বাংলা কপি জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যা ইতোমধ্যে উচ্চ আদালত দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। একইসঙ্গে সেনাপ্রধান ও সেনাবাহিনী এবং ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বিভিন্ন আন্ডারগ্রাউন্ড মিডিয়ার প্রতিবেদনের কপিও এতে সুকৌশলে জুড়ে দিয়েছে চক্রটি।

বিষয়টি রোধ করতে অজ্ঞাতনামা সহস্রাধিক ব্যক্তিকে আসাসি করে মামলা করেছে নগদ। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ২০ এপ্রিলের মধ্যে তাদের এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।

এদিকে গত বুধবার উচ্চ আদালতও ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে কাতারভিত্তিক আল জাজিরা টেলিভিশনের তথ্য চিত্রটি অপসারণের জন্য বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে নির্দেশনা দিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা দেশে বিতরণ করা এ ধরনের উস্কানিমূলক লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করে উস্কানি দেওয়া এবং দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে যা মূলত নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনগুলোর কর্মপ্রক্রিয়ার অংশ হয়ে থাকে। প্রক্রিয়ার সঙ্গে দেশি-বিদেশি একটি কুচক্রীমহল জড়িত বলেও তথ্য পেয়েছেন সংস্থাগুলো।

রাজধানী এবং রাজধানীর বাইরে বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে একটি আর্থিক কোম্পানি তাদের ডিস্ট্রিবিউটরদের মাধ্যমে এসব লিফলেট বিতরণ করিয়েছে। পরে ডিস্ট্রিবিউটরদের কর্মীরা বিভিন্ন এজেন্ট পয়েন্টে গিয়ে এজেন্টদের হাতে হাতে এসব লিফলেট দিয়ে এসেছেন। বিভিন্ন এজেন্ট পয়েন্টে থাকা সিসি ক্যামেরায় যা ধরা পড়েছে।

লিফলেট বিতরণের এ সংক্রান্ত বেশ কিছু ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যা থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় কোনো একটি কোম্পানির লোকেরা এসব লিফলেট বিতরণের দায়িত্ব পালন করছেন। বিভিন্ন ভিডিওতে পারস্পরিক কথোপোকথন থেকেও দেশি-বিদেশি অংশীদারিত্বে পরিচালিত আর্থিক কোম্পানিটির নাম চলে এসেছে।

নগদের পক্ষ থেকে মামলা করার খবর নিশ্চিত করলেও তারা এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির এর এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কোম্পানি হওয়ায় সরকার ও সরকারি সেবার বিষয়ে কেউ চক্রান্ত করলে নগদ সে বিষয়ে সবসময়ই তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।

কোম্পানির আরেকটি সূত্র বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে নগদ যখন ব্যবসায়িকভাবে অনেক ভালো করছে, একের পর এক নতুন নতুন সেবা নিয়ে এসে বাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করছে তখন প্রতিহিংসার কারণে একটি চক্র নানাভাবে নগদেড় নামে ভুয়া খবর রটিয়ে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করার কৌশল নিয়েছে।

সারাবাংলা/এসএসএ

গুজব ছড়ানো নগদ মামলা