আবারও সড়কে ববি শিক্ষার্থীরা
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:৪৩
বরিশাল : আল্টিমেটাম শেষে ফের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। আর অবরোধের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন বরিশালসহ, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও কুয়াকাটাগামী যাত্রীরা।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে তাদের ওপর হামলার ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি। আবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহতরা হামলাকারীদের নামের তালিকা দিলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় মামলা দেয়। যা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখান করেছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অ.দা.) প্রফেসর ড. মুহসিন উদ্দিন বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এতে শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নীচ তলায় সংবাদ সম্মেলন করে হামলার ঘটনায় জড়িত তিনজনের নাম প্রকাশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়ের করা মামলা প্রত্যাখ্যান করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে শনাক্তকৃত ব্যক্তিদের আসামি করে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার মধ্যে পুনরায় মামলা করার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। অন্যথায় সড়ক অবরোধসহ জোরালো কর্মসূচিতে যাবার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস জানান, থানায় মামলা দায়েরের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। এ সময় হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের আহ্বান জানানো হয়।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা তদন্ত করে দেখব, সেই রাতে হামলাকারী কারা ছিল। তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করে রূপাতলী বিআরটিসি কাউন্টারের ম্যানেজার রফিক। এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিআরটিসি কাউন্টার ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করেন। ওইদিন দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ রফিককে গ্রেফতার করলে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা।
এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে নগরীর রূপাতলী হাউজিং এলাকার বিভিন্ন মেসে ঢুকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর করে বাস শ্রমিকরা। হামলায় ১১ জন শিক্ষার্থী গুরুত্বর আহত হয়। আহতরা শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হামলার পর বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কে কাঠ পুড়িয়ে অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় একটি বাস ভাঙচুর করে তাতে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীরা।
সারাবাংলা/এনএস