Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ববি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ২ পরিবহন শ্রমিক গ্রেফতার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:৪৩

বরিশাল: গভীর রাতে মেসে ঢুকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় দুই বাস শ্রমিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার দু’জন হলেন— এম কে পরিবহনের সুপারভাইজার আবুল বাশার রনি (২৫) ও সাউথ বেঙ্গল পরিবহনের হেলপার মো. ফিরোজ (২৪)। তারা দু’জনই নগরীর রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হাউজিং এলাকার বাসিন্দা।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, রূপাতলী হাউজিং এলাকায় শিক্ষার্থীদের কয়েকটি মেসে হামলা চালানোর ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মুহসিন উদ্দিন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলা দায়েরের পর আসামিদের শনাক্ত ও গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক দল কাজ শুরু করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ রূপাতলী বাসস্ট্যান্ডে অভিযান চালায়। সেখানে পার্কিং করে রাখা প্রায় অর্ধশতাধিক বাসে তল্লাশি চালানো হয়। রাত দেড়টার দিকে আবুল বাশার রনি ও মো. ফিরোজকে একটি বাসের ভেতর থেকে গ্রেফতার করা হয়।

ওসি আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আবুল বাশার রনি ও মো. ফিরোজ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা ছাড়াও হামলার ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন বাস শ্রমিক জড়িত রয়েছেন। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

এর আগে, শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। দেড় ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শনাক্ত ব্যক্তিদের আসামি করে ফের মামলা দায়েরের জন্য সাড়ে ১৩ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দিয়ে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা। দেড় ঘণ্টার অবরোধে ভোগান্তিতে পড়েন বরিশালসহ, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও কুয়াকাটাগামী যাত্রীরা।

গত মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করেছিলেন রূপাতলী বিআরটিসি কাউন্টারের ম্যানেজার রফিক। এর প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিআরটিসি কাউন্টার ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ করেন। ওই দিন দুপুর সাড়ে ৩টার দিকে পুলিশ রফিককে গ্রেফতার করলে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে নগরীর রূপাতলী হাউজিং এলাকার বিভিন্ন মেসে ঢুকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মারধর করেন পরিবহন শ্রমিকরা। হামলায় ১১ জন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। আহতদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হামলার পর বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কাঠ পুড়িয়ে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় একটি বাস ভাঙচুর করে তাতে আগুনও দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীরা।

এরপর বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিন বাদী হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে শতাধিক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।

মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচ তলায় সংবাদ সম্মেলন করে হামলার ঘটনায় জড়িত তিন জনের নাম প্রকাশ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসময় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে  বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়ের করা মামলা প্রত্যাখ্যান করেন তারা। শনাক্তকৃত ব্যক্তিদের আসামি করে ফের মামলা দায়েরের রার দাবি জানান। তা না হলে মহাসড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচিতে যাবার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

আরও পড়ুন-

আবারও সড়কে ববি শিক্ষার্থীরা

১৩ ঘণ্টার আল্টিমেটামে অবরোধ তুলল ববি শিক্ষার্থীরা

সারাবাংলা/টিআর

টপ নিউজ পরিবহন শ্রমিক গ্রেফতার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মারধর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর