Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘স্যার আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন!’

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:২২

ঢাকা: নিজের শিক্ষক জাতীয় অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের হাতে মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক’ তুলে দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রফিকুল ইসলাম সাহেবের হাতে পদক তুলে দেওয়া— এটা যে আমার জন্য কত সম্মানের এবং গৌরবের, কিন্তু আমি নিজের হাতে দিতে পারলাম না। স্যার আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন।’

বিজ্ঞাপন

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২১-এর উদ্বোধন এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক-২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাজধানীর সেগুনবাগিচার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রান্তে যুক্ত ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক তুলে দেন।

মাতৃভাষা সংরক্ষণ, পুনরুজ্জীবন, বিকাশ, চর্চা, প্রচার-প্রসারে অবদান রাখায় জাতীয় অধ্যাপক বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞানী, নজরুল গবেষক, লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামসহ তিন ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা জাতীয় পদক প্রদান করা হয়।

উল্লেখ্য, জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শিক্ষক।

জাতীয় ক্যাটাগরিতে অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ছাড়াও খাগড়াছড়ির জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা এই পুরস্কারে ভূষিত হন। আন্তর্জাতিক ক্যাটাগরিতে উজবেকিস্তানের নাগরিক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ ও বলিভিয়ার অনলাইনভিত্তিক সংগঠন অ্যাক্টিভিজমো ল্যাঙগুয়াজ এই পুরস্কারে ভূষিত হন।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক নীতিমালা-২০১৯ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট দুই বছর পরপর এ পুরস্কার প্রদান করবে। প্রথমবারের মতো এ বছর পদক দেওয়া শুরু হলো।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের চার দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী দিনে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলা একাডেমির পরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী।

বিজ্ঞাপন

এছাড়া ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ঢাকায় নিযুক্ত ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টর বিট্রিচ কালদুল। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রান্তে শিক্ষা উপমন্ত্রী মজিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য ও সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

নিজ শিক্ষকের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক প্রাপ্তির প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার দুঃখ এখানেই থেকে গেল যে, আমি নিজে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। বিশেষ করে যখন আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক রফিকুল ইসলাম সাহেবের হাতে পদক তুলে দেওয়া—এটা যে আমার জন্য কত সম্মানের এবং গৌরবের। কিন্তু আমার দুঃখ এখানেই, আমি নিজের হাতে দিতে পারলাম না। স্যার আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই করোনাভাইরাসের কারণে—আসলে প্রধানমন্ত্রী হলে সব স্বাধীনতা থাকে না। অনেকটা বন্দি জীবনযাপন করতে হয়, সেরকমই আছি। কারণ আমি এক জায়গায় যেতে গেলে আমার সাথে বহু লোক। নিরাপত্তার লোক, অমুক লোক-তমুক লোক, প্রায় হাজার খানেক লোককে রাস্তায় দাঁড় করায়, নানাভাবে তাদেরকে কাজে লাগায়। তাদের কথা চিন্তা করেই কিন্তু আমি আসতে পারিনি। তবু আমি অভিনন্দন জানাই আপনাকে।’

একইসঙ্গে অন্যান্য যারা পুরস্কার পেয়েছেন তাদের প্রতিও আন্তরিক অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক হিসাবেই এটা সবসময় থাকা ভালো। যারা এই পুরস্কারটা পেলেন মনে করি-এটাও একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন হল যে, আমরা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে গুণীজনের সম্মান এবং ভাষার প্রতি সম্মান দেখাতে পারলাম।’

এছাড়া আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটকে ক্যাটাগরি-দুইয়ে উন্নীত করার ঘোষণা দেওয়ার জন্য ইউনেস্কোকেও ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

সারাবাংলা/এনআর/এমআই

আহমেদ রফিক টপ নিউজ শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

শরৎ বাংলাদেশের কোমল স্নিগ্ধ এক ঋতু
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৫৪

সম্পর্কিত খবর