Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভ্যাকসিন বিতরণে বিলম্বের আভাস সিরামের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৩:২১

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন উৎপাদক প্রতিষ্ঠান সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার (এসআইআই) কাছে যেসব দেশ ও সরকার করোনার ভ্যাকসিন চাইছে, তাদেরকে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আদর পুনাওয়ালা।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক টুইটার বার্তায় তিনি বলেছেন, ভ্যাকসিন রফতানির ক্ষেত্রে ভারতের নিজস্ব চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ‘নির্দেশনা’ রয়েছে। ফলে অন্য দেশে রফতানি হয়তো বিলম্ব হতে পারে।

এ ব্যাপারে নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, কার তরফ থেকে সিরাম ইনস্টিটিউট ওই নির্দেশনা পেয়েছে, সিইও তা বলেননি। এ প্রশ্নে তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

প্রতিবছর বিশ্বে যে পরিমাণ ভ্যাকসিন উৎপাদন হয়, তার তিন-পঞ্চমাংশ সরবরাহ করে ভারত। আর ১৩০ কোটি মানুষের দেশ ভারতেই এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলছে। এমনিতে বছরে গড়ে ৩৯ কোটি মানুষকে হাম ও যক্ষ্মার ভ্যাকসিন দেওয়ার অভিজ্ঞতা ভারতের আছে। কিন্তু বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে করোনার ভ্যাকসিন কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে নিতে নরেন্দ্র মোদির সরকারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

মধ্য জানুয়ারিতে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগের কার্যক্রম শুরু করার পর এখন পর্যন্ত সেখানে মোট জনসংখ্যার ১ শতাংশকেও ভ্যাকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। ভারতে ইতোমধ্যে এক কোটি ৯ লাখের বেশি মানুষের মধ্যে করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণের দিক দিয়ে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের পরই ভারতের অবস্থান।

দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখন পর্যন্ত করোনার দুটি ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে।

এর মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন ভারতে উৎপাদন এবং কোভিশিল্ড নামে বাজারজাত করছে সিরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। আর ভারতীয় প্রতিষ্ঠান ভারত বায়োটেক তাদের ভ্যাকসিন বাজারজাত করছে কোভ্যাক্সিন নামে।

যুক্তরাষ্ট্রের নোভাভ্যাক্সের উদ্ভাবিত করোনার ভ্যাকসিনও উৎপাদন করতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউট। তবে ওই ভ্যাকসিন এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায়। সিরাম ইনস্টিটিউট এখন প্রতিদিন গড়ে ২৪ লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে। ভারত সরকারের পাশাপাশি ব্রাজিল, মরক্কো, বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকাতেও ভ্যাকসিন সরবরাহ করছে তারা।

বাংলাদেশ সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে তিন কোটি ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন কিনছে। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ তাদের সরবরাহ করার কথা। এর মধ্যে জানুয়ারিতে প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ হাতে পাওয়ার পর সারা দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করেছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় চালানের ভ্যাকসিন সোমবারই (২২ ফেব্রুয়ারি) দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি কোভ্যাক্সকেও ২০ কোটি ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা রয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউটের। ভবিষ্যতে আরও ৯০ কোটি ডোজ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়ে রেখেছে আদর পুনাওয়ালার কোম্পানি।

বিশ্বজুড়ে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এবং গ্যাভির নেতৃত্বে কোভ্যাক্স নামের ওই প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে। যেসব দেশের ভ্যাকসিন কেনার সামর্থ্য নেই তারা বিশেষ তহবিলের আওতায় কোভ্যাক্স থেকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবে মোট জনসংখ্যার একটি অংশের জন্য। বাকিদের ভ্যাকসিন কিনে নিতে হবে।

এ ব্যাপারে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, সিরাম ইনস্টিটিউটের সিইও’র ধৈর্য ধরার আহ্বানের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে তারা কোভ্যাক্সের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছিল, তবে উত্তর মেলেনি।

আরও কয়েকটি কোম্পানি করোনার ভ্যাকসিন উদ্ভাবণ করলেও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন নিয়েই আগ্রহ বেশি, কারণ এর দাম তুলনামূলক কম এবং সংরক্ষণ পদ্ধতি সহজ।

সারাবাংলা/একেএম

আদর পুনাওয়ালা করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন বিতরণে বিলম্ব সিরাম ইনস্টিটিউট


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভূতের গলির বাসায় মিলল বৃদ্ধের মরদেহ
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:০০

সম্পর্কিত খবর