হাতিরঝিলে পাওয়া মরদেহ নিখোঁজ সাদমানের
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৮:৩৭
ঢাকা: রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদমান সাকিবের মরদেহের খোঁজ পেয়েছে পরিবার। এর মধ্যেই সাদমানের মরদেহ বেওয়ারিশ হিসেবে জুরাইন কবরস্থানে দাফন করেছে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) মা মনোয়ারা হোসেন হাতিরঝিল থানা পুলিশের কাছে থাকা মরদেহের ছবি দেখে ছেলে সাদমানকে শনাক্ত করেন। সোমবার রাতে সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম সাদমানের লাশ দাফন করেছে। গত ১৪ জানুয়ারি হাতিরঝিলে তার মরদেহ পায় হাতিরঝিল থানা পুলিশ। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ১৪ জানুয়ারি বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটের দিকে হাতিরঝিলের বেগুনবাড়ি ফ্লাইওভার পূর্ব দিকে উঠার মুখে পাশের পানিতে অপরিচিত অনুমান (২২) বছরের এক মুসলিম যুবকের মরদেহ পাওয়া যায়। তবে তার শরীরের কোথাও কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
গত ১৩ জানুয়ারি সাদমান সাকিব ওরফে রাফি (২২) ভাটারা এলাকা থেকে নিখোঁজ হলে মা মনোয়ারা হোসেন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৩ জানুয়ারি সকালে সাদমান কাউকে কিছু না বলে বাসা থেকে বেরিয়ে যান। এরপর আর বাসায় ফিরে আসেনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান না পেয়ে থানায় জিডি করেছি। তার মুঠোফোন নম্বরটিও বন্ধ।
মনোয়ারা হোসেন বলেন, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফেরে সাদমান। করোনার কারণে আর মালয়েশিয়ায় যাওয়া হয়নি তার। সাদমানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা সৌদি আরবে। তিন বছর আগে মালয়েশিয়ার এপিইউতে ভর্তি হন তিনি। ঢাকায় তার কোনো বন্ধুবান্ধব নেই। ঢাকার রাস্তাঘাটও ভালোভাবে চেনে না। তবে মাঝেমধ্যে সাদমান খুব বেশি চিন্তিত থাকত।
ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তারুজ্জামান বলেন, সাদমান মালয়েশিয়ায় ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। এ জন্য তার বাবাকে টাকা জোগাড় করতে বলেন। এর আগের দিনই তিনি বেরিয়ে যান। সিসিটিভির ফুটেজে ল্যাপটপ ব্যাগ নিয়ে সাদমানকে বের হতে দেখা যায়।
এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর ২১ জানুয়ারি সাদমানকে ফেনী থেকে উদ্ধার করা হয়েছে— হঠাৎ এমন কথা বলে যোগাযোগ করা হয় তার মায়ের সঙ্গে। কিছু সময় পর জানানো হয়, সাদমান হাসপাতালে, তার চিকিৎসার জন্য রক্ত লাগবে। রক্ত জোগারের জন্য টাকা চাওয়া হয় সাদমানের মায়ের কাছে।
সপ্তাহখানেক নিখোঁজ থাকা সন্তানের সন্ধান পাওয়ার কথা শুনে মা আর দেরি করেননি। আট হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন বিকাশে। কিন্তু এরপর থেকেই ওই মোবাইল নম্বর বন্ধ পাচ্ছেন সাদমানের মা মনোয়ারা হোসেন। পুলিশের ধারণা, একটি প্রতারক চক্র ছেলের কথা বলে পরিবারটির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সারাবাংলা/ইউজে/এনএস