Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৬ মাসে করের আওতায় এসেছে ৬৫ হাজার নতুন কোম্পানি

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:১০

ঢাকা: দেশের সব লিমিটেড কোম্পানিকে করজালে আনতে ২০২০ সালের আগস্টে টাস্কফোর্স গঠন করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। টাস্কফোর্স ই-টিআইএন নেওয়া, রিটার্ন নিশ্চিত ও ভুয়া অডিট রিপোর্ট প্রতিরোধে কাজ করে। মাত্র ছয় মাসে টাস্কফোর্সের কার্যক্রমে ৬৫ হাজারের বেশি নতুন করদাতা কোম্পানি করের আওতায় এসেছে। আগামী এপ্রিলের মধ্যে শতভাগ লিমিটেড কোম্পানি করের আওতায় চলে আসবে বলে এনবিআর সূত্রে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এনবিআর সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছর কোম্পানির রিটার্ন বেড়েছে ৩৫ দশমিক ২১ শতাংশ, যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছর ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ৯১ শতাংশ। শুধু ই-টিআইএন আর রিটার্ন দাখিল নয়, চলতি অর্থবছর কোম্পানি আয়করের পরিমাণ বাড়বে ৫০০ থেকে এক হাজার কোটি টাকা; আর আগামী অর্থবছর বাড়বে দুই থেকে তিন হাজার কোটি টাকা। এনবিআরের গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

এদিকে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর পরিদফতরের (আরজেএসসি) হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালের জুলাই পর্যন্ত নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা দুই লাখ ৪৫ হাজার ৬৫৫টি। এর মধ্যে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি তিন হাজার ৫৩২টি ও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি এক লাখ ৭৫ হাজার ৯৩২টি। আর এনবিআরের হিসাবে, লিমিটেড কোম্পানি এক লাখ ৭৬ হাজার ৪০০। এর মধ্যে ই-টিআইএন রয়েছে ৭৬ হাজার ও রিটার্ন দেয় ৩৫ হাজার। ৯৮ হাজার ৪০০ লিমিটেড কোম্পানি টিআইএন নেয়নি, রিটার্নও দেয় না।

আরও জানা যায়, এসব কোম্পানিকে ই-টিআইএন ও রিটার্ন নিশ্চিত করতে গত বছরের ১৯ আগস্ট এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) এর পরিচালক মো. শাব্বির আহমদকে টিম লিডার করে সাত সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করা হয়।

এদিকে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৫২ কোম্পানি ই-টিআইএন নিয়েছে। যেখানে ২০২০ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ৭৭ হাজার ৮১৭, ২০১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৭১ হাজার ১৯০, ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৭৫৪, ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৫৮ হাজার ৩৫ ও ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ৫২ হাজার ৪৮০টি। আর চলতি অর্থবছর (১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত) প্রায় ছয়মাসে কোম্পানি হিসেবে নতুন ই-টিআইএন নিয়েছে ৫৭ হাজার ৫৩৫টি। যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছর নিয়েছে ৬ হাজার ৬২৭, ২০১৮-১৯ অর্থবছর ৬ হাজার ৪৩৬, ২০১৭-১৮ অর্থবছর ৬ হাজার ৭১৯ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছর ৫ হাজার ৫৫৫।

বিজ্ঞাপন

টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর ছয় মাসে ঢাকায় কোম্পানি রিটার্ন দাখিল হয়েছে ৩০ হাজার ৮৯৪টি। যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছর দাখিল হয় ২২ হাজার ৮৪৯টি ও ২০১৮-১৯ অর্থবছর ২২ হাজার ৬৪৪টি। রিটার্ন দাখিলের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে কর অঞ্চল-১২। এ কর অঞ্চলে কোম্পানির রিটার্ন দাখিল প্রবৃদ্ধি ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ। এরপরে রয়েছে কর অঞ্চল-৪, ঢাকা ৪৫ দশমিক ১ শতাংশ। এছাড়া কর অঞ্চল-১৪, ঢাকা ৪৩ দশমিক ৯ শতাংশ, কর অঞ্চল-১৫, ঢাকা ৪৩ দশমিক ১ শতাংশ, কর অঞ্চল-৫, ঢাকা ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ, কর অঞ্চল-৮, ঢাকা ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ, কর অঞ্চল-৭, ঢাকা ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ, কর অঞ্চল-১৩, ঢাকা ৩৩ দশমিক ৬ শতাংশ, কর অঞ্চল-১০, ঢাকা ৩২ দশমিক ৫ শতাংশ ও কর অঞ্চল-২, ঢাকা ৩০ দশমিক ৭ শতাংশ।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে টাস্কফোর্সের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের কাজ করে চলেছি। ইতোমধ্যে একটি প্রতিবেদন এনবিআরে দেওয়া হয়েছে। জুন নাগাদ তথা চলতি অর্থবছরে করের আওতা বৃদ্ধি পাবে। এছাড়া আগামী অর্থবছরে করের আওতা আরও বাড়বে।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (করনীতি) আলমগীর হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের টাস্কফোর্স কাজ করছে। তারা একটি প্রতিবেদনও দিয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, আরও করদাতা কোম্পানি করজালের আওতায় আসবে। কাজ চলছে। সামনে আরও ভাল কিছু দেখতে পাবেন।

সারাবাংলা/এসজে/পিটিএম

ই-টিআইএন এবিআর করদাতা কোম্পানি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর