Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভ্যাকসিনে অগ্রাধিকার তালিকায় যোগ হলেন শিক্ষকরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:৫৭

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জাতীয় পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম চলছে। প্রথম থেকে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত সম্মুখসারির চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ ৪০ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে দেশে। এরই সঙ্গে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রাপ্তির তালিকায় যুক্ত হলো দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও। আজ থেকেই সুরক্ষা ওয়েবসাইটে নিবন্ধন শুরু হয়েছে শিক্ষকদের। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ১০ লাখ ব্যক্তিকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষকরাও পাবেন ভ্যাকসিন। এরইমধ্যে দেশের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের তালিকা জমা হয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতরে। এ ছাড়াও স্বায়ত্তশাসিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকেও দেওয়া হচ্ছে তালিকা। তবে যেসব শিক্ষকদের বয়স চল্লিশের কম, তাদেরকে ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য তালিকা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা অধিদফতর বা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরাও ভ্যাকসিন যাতে দ্রুত পেতে পারে সেই ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

এ ছাড়া কূটনীতিক, বিদেশি নাগরিক ও বিমানের কেবিন ক্রুরাও অল্প সময়ের মধ্যেই ভ্যাকসিনের আওতায় আসবেন বলেও জানা গেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে।

অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল, কলেজ যখন খুলে দেওয়া হবে তখন শিক্ষকদের ব্যস্ত থাকতে হবে পাঠদানের জন্য। তাদের সুরক্ষার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষকদের পারিবারিক সুরক্ষার বিষয়টিও এখানে এসে যাবে। কারণ তারা তো স্কুলে বা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যখন যাবেন তখন কিছুটা ঝুঁকি তো থাকেই আক্রান্ত হওয়ার। আর তাই তাদের সুরক্ষিত করা গেলে তাদের পরিবারও সুরক্ষিত করা যাবে।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষকদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এক্ষেত্রেও একটি চ্যালেঞ্জ থাকে। কিন্তু আমরা মনে করি যদি ৪০ বছরের কম বয়সী শিক্ষকদের তালিকা শিক্ষা অধিদফতর বা মন্ত্রণালয় থেকে যদি আমাদের কাছে দেওয়া হয় তবে তাদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া যাবে সহজে। এক্ষেত্রে আমাদের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সেন্টার (এমআইএস) বিভাগ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠানো হলে তারা সার্ভারে ডাটা এন্ট্রি দিবে। পরবর্তীতে ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী শিক্ষকরা নিবন্ধন করে নিতে পারবে।’

এ দিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছে, ‘দেশে চলমান চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিদের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রমের পাশাপাশি দেশের শিক্ষক, বিমানের পাইলট, জাহাজের ক্রুসহ আরও অন্যান্য ফ্রন্টলাইনারদের ভ্যাকসিন প্রদানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে।’

উল্লেখ্য, জনসাধারণ পর্যায়ে ভ্যাকসিন প্রয়োগের প্রথম দিন ৩১ হাজার ১৬০ জন ও দ্বিতীয় দিন ৪৬ হাজার ৫০৯ জন ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। তৃতীয় দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন এক লাখ এক হাজার ৮২ জন। চতুর্থ দিনে দেশে এক লাখ ৫৮ হাজার ৪৫১ জন ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন। পঞ্চম ও ষষ্ঠ দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করে যথাক্রমে দুই লাখ চার হাজার ৫৪০ জন ও এক লাখ ৯৪ হাজার ৩৭১ জন। সপ্তম দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন এক লাখ ৬৯ হাজার ৩৫৩ জন। অষ্টম দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ২৬ হাজার ৬৭৮ জন। নবম দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ২৬ হাজার ৯০২ জন। দশম দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ২৬ হাজার ৭৫৫ জন। একাদশ দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ৬১ হাজার ৯৪৫ জন ও দ্বাদশ দিনে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন দুই লাখ ৩৪ হাজার ৫৬৪ জন। ত্রয়োদশ দিনে দুই লাখ ২৫ হাজার ২৮০ জন ও চতুর্দশ দিনে এক লাখ ৮২ হাজার ৮৯৬ জন ভ্যাকসিন নিয়েছেন। ১৫ তম দিনে ভ্যাকসিন নিলেন এক লাখ ৮১ হাজার ৯৮৫ জন।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন হিসেবে শুক্রবার ও ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম বন্ধ ছিল।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রথম দিন ২১ জনের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও দ্বিতীয় দিন দেখা দেয় ৭১ জনের মধ্যে। তৃতীয় দিন ৯৪ জন এবং চতুর্থ দিন দেখা দিয়েছে ৭০ জনের শরীরে। পঞ্চম দিনে দেশে ৭৬ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়। ষষ্ঠ দিনে ৩১ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সপ্তম দিনে ১৮ ও অষ্টম দিনে ২১ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অষ্টম দিনে ২৯ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। নবম দিনে ৩৫ ও দশম দিনে ২০ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একাদশ দিনে ২৭ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। দ্বাদশ ও ত্রয়োদশ দিনে যথাক্রমে ৪১ ও ৩১ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। চতুর্দশ দিনে ২১ ও ১৫ তম দিনে ৩৯ জনের মাঝে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। তবে সবাই এখন পর্যন্ত সুস্থ আছেন।

সারাবাংলা/এসবি/একে

কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন শিক্ষক


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

আগস্টে কমেছে মূল্যস্ফীতি
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৫:০৭

আইভরি কোস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১৩
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৪০

সম্পর্কিত খবর