ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মানবসম্পদ, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা এই তিনটি সূচকের ভিত্তিতে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের বিষয়টি পর্যালোচনা করে। এর ফলে ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম ত্রি-বার্ষিক পর্যালোচনা সভায় বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের তিনটি মানদণ্ড খুব ভালোভাবে পূরণ করে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করলো।’
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি তেজগাঁও কার্যালয়ে সংযুক্ত ছিলেন।
পাঁচ দিনব্যাপী নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির (সিডিপি) ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা সভা শেষে গতকাল শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এলডিসি থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়েছে বাংলাদেশকে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতিসংঘের পর্যালোচনায় ২০১৯ সালে মাথাপিছু আয়ের মানদণ্ড নির্ধারিত ছিল ১ হাজার ২২২ মার্কিন ডলার। ওই বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৮২৭ ডলার। আর বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৬৪ ডলার। অর্থাৎ মানদণ্ডের প্রায় ১.৭ গুণ। মানবসম্পদ সূচকে নির্ধারিত মানদণ্ড ৬৬-এর বিপরীতে বাংলাদেশের অর্জন ৭৫ দশমিক চার। অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ভঙ্গুরতা সূচকে উত্তরণের জন্য মানদণ্ড নির্ধারিত ছিল ৩২ বা তার কম। কিন্তু ওই সময়ে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ২৭।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সাল শুধু আমাদের জন্য নয়, গোটা বিশ্বের জন্য ছিল সংকটময়।’
এ মহামারিতে যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে টিকা প্রদান শুরু করেছি, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৯৪০ জনকে প্রথম টিকা প্রদান করা হয়েছে। অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এখন পর্যন্ত আমরা ১ লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি, যার জিডিপির ৪. ৪৪ শতাংশ।’
তিনি বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোলনের ফলে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ একটি প্রত্যয় ও মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে জায়গা করে নেবে।’
বাঙালি বীরের জাতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মাত্র নয় মাসে আমাদের স্বাধীনতার লাল সূর্য ছিনিয়ে এনেছেন। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি—আমাদের এই উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।’