Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুনর্বাসন ছাড়া লালদিয়ার চরবাসীকে উচ্ছেদ না করার আহ্বান

সারাবাংলা ডেস্ক
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২১:০৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: নগরীর পতেঙ্গায় লালদিয়ার চরের বাসিন্দাদের পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ না করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের দুই সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন ও ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল। চট্টগ্রামের আপামর মানুষের দাবি না মেনে উচ্ছেদে গিয়ে কোনো রক্তক্ষয়ী সংঘাতে জড়ালে তার দায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে বলেও তারা হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক বিবৃতিতে দুই নেতা এসব কথা বলেছেন।

নগরীর পতেঙ্গায় বিমানবাহিনীর ঘাঁটি সম্প্রসারণের জন্য ১৯৭২ সালে কয়েক হাজার স্থানীয় বাসিন্দাকে সরিয়ে লালদিয়ার চরে পুনর্বাসন করে তৎকালীন সরকার। ১৯৭৫ সালের পর বিভিন্ন আইনি জটিলতার ফাঁকে লালদিয়ার চরের ওই ‍ভূমি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বিএস জরিপে লিপিবদ্ধ করা হয়। এরপর থেকে লালদিয়ার চরের বাসিন্দাদের বেআইনিভাবে বসবাসকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।

২০০৫ সালের ১২ জুলাই চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লালদিয়ার চরে বসবাসরত প্রায় ৫০০ পরিবারকে উচ্ছেদ করে সেই ভূমি ইজারা দেয় ইনকনট্রেড লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে। সেখানে ওই প্রতিষ্ঠান একটি অফডক নির্মাণ করেছে। লালদিয়ার চরে এখন প্রায় ২৩০০ পরিবারের ১৪ হাজার মানুষ বসবাস করছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ আরও ২৫ একর জায়গা উন্নয়ন করে ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে উচ্ছেদের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেলে লালদিয়ার চরের কয়েক হাজার মানুষ মানববন্ধন করে উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসনের দাবি জানান। এরপর শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন লালদিয়ার চরবাসী।

এ প্রেক্ষাপটে দেওয়া বিবৃতিতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘এক শ্রেণির লোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। তাদের সঙ্গে মিলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ লালদিয়ার চরের হাজার, হাজার মানুষকে ভিটেমাটি ছাড়া করতে চাচ্ছে। তাদের মুখোশ চট্টগ্রামবাসীর সামনে খুলে গেছে। ষড়যন্ত্রকারী লোভী ব্যবসায়ীদের তালিকা হচ্ছে। সুষ্পষ্টভাবে বলতে চাই, পুনর্বাসন ছাড়া লালদিয়ার চরবাসীকে উচ্ছেদ করা যাবে না। উচ্ছেদ করতে গিয়ে যদি রক্তক্ষয় কিংবা কোনো মানুষের জীবনহানি হয় তার পূর্ণ দায়দায়িত্ব চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।’

‘বন্দরের অভ্যন্তরে বসে কারা এসব কাজে উসকানি দিচ্ছেন, তার তালিকাও আছে। ওয়ান-ইলেভেনের সময় দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার হওয়া কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী এ কাজে জড়িত। চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা বিএনপি-জামায়াত চক্র প্রধানমন্ত্রীর সব অর্জনকে ধুলিস্যাৎ করে দিতে চায়। তারা চায় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বিএনপি জামায়াতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে।’

বন্দর কর্তৃপক্ষের উচ্ছেদ অভিযানে কোনো ধরনের সহযোগিতা না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন খোরশেদ আলম সুজন।

এদিকে, পৃথক বিবৃতিতে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বিমানবাহিনীর ঘাঁটি সম্প্রসারণের জন্য লালদিয়ার চরে পতেঙ্গার স্থানীয় কিছু বাসিন্দাকে স্থানান্তর করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ ৪৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে তারা সেখানে বসবাস করছেন। হঠাৎ করে কোনো ধরনের পূর্বঘোষণা ছাড়া হাতেগোনা মাত্র কয়েকদিন সময় দিয়ে প্রায় ১৪ হাজার বাসিন্দাকে তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অমানবিক। আমরা এ ধরনের অমানবিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা কোনো অবস্থাতেই পুর্নবাসন ছাড়া লালদিয়ার চরের বাসিন্দাদের তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ মানবো না।’

সারাবাংলা/আরডি/টিআর

ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল খোরশেদ আলম সুজন চরবাসীকে উচ্ছেদ লালদিয়ার চর


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর