‘২০২৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে ঢেলে সাজাতে হবে’
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:২৮
ঢাকা: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে ঢেলে সাজাতে চাই। দলের ভিতর যারা মাদক ব্যবসায়ী আছে, যারা দুর্নীতি করেন, দলকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করেন তাদেরকে দল থেকে বের করে দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে গোপন ব্যালটে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে ফয়সাল কাদের রুমী সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
ফয়সাল কাদের রুমী (২৯৯) ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শফিকুল ইসলাম শফি পেয়েছেন (১৪৪ ভোট)। এছাড়া গোলাম মোস্তফা (৩৬৪) ভোট পেয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মো. জাহেদুল হক পেয়েছেন (৭০) ভোট। সন্ধ্যায় দ্বিতীয় অধিবেশনে ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে এ ফলাফল ঘোষণা করেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান।
এর আগে উল্লাপাড়া বিজ্ঞান কলেজ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে রাজধানীর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সম্মেলনের উদ্ধোধন করেন সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর কে এম হোসেন আলী হাসান।
উল্লাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘সম্মেলন করার কথা বললে, অনেক জেলার নেতারা আমার উপর বিরক্ত হন। শেখ হাসিনা আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। রাস্তা থেকে তুলে এনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বানিয়েছেন। কারণ ২০২৪ সালে যে নির্বাচন হবে সে নির্বাচনকে সামনে রেখে দলকে ঢেলে সাজাতে হবে।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দলের ভিতর যারা মাদক ব্যবসায়ী আছেন, দলকে ব্যবহার করে যারা দুর্নীতি করেন, দলকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজি করে তাদেরকে দল থেকে বের করে দেয়ার দায়িত্ব আমাদের।’
দুর্দিনের ত্যাগী নেতাকর্মীদের সংগঠনের ঠাঁই করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এসএম কামাল বলেন, ‘২০০১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত যার আওয়ামী লীগ করেছিল তাদের নেতা বানাতে হবে। খালেদা জিয়া-নিজামীর অপশাসন-দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যারা লড়াই সংগ্রাম করেছে, তাদের নেতা বানাতে হবে। যাদের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় তাদের নেতা বানানো যাবে না। যাকে দেখলে মানুষ বলে চাঁদাবাজ, ভণ্ড, তাকে নেতাকে বানানো যাবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমার নেত্রী বলেন, মানুষের আস্থা-ভালোবাসা ছাড়া ক্ষমতায় টিকে থাকা যায় না। সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি করে সাময়িক ক্ষমতায় টিকে থাকা যায়। কারো পকেটে দলকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ বানাতে হবে, আওয়ামী লীগের আওয়ামী লীগ বানাতে হবে। ত্যাগী নেতাদের দিয়ে আওয়ামী লীগ বানাতে হবে। আমরা সাধারণ মানুষের আওয়ামী লীগ বানাবো। কিন্তু দুর্নীতিবাজ চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও মাদকব্যাবসয়ীদের দিয়ে আওয়ামী লীগ বানাবো না। এদের কাছ থেকে আওয়ামী লীগকে মুক্ত করব- এটাই আমাদের শপথ।’
সম্মলনে অন্যান্যের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সদস্য নূরুল ইসলাম ঠান্ডু, প্রফেসর মেরিনা জাহান কবিতা, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, সিরাজগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম, রায়গঞ্জ-তাড়াশ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আব্দুল আজিজ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু ইউসুফ সূর্য্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড. বিমল কুমার দাস, মো. মোস্তফা কামাল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার, যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী সেখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র এস এম নজরুল ইসলাম।
সারাবাংলা/এনআর/পিটিএম