Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উন্নয়নশীল দেশের দক্ষ নাগরিক গড়ে তুলতে আমরা বদ্ধপরিকর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:০৩

ঢাকা: শিক্ষার খরচকে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা বিনিয়োগ মনে করি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ। উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে আমরা যে স্বীকৃতি পেয়েছি। সেটা আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে এবং ধরে রাখার জন্যই দরকার শিক্ষার প্রসার, উপযুক্ত দক্ষ কারিগর এবং নাগরিক। আমরা সেই দক্ষ নাগরিক এবং উপযুক্ত নাগরিক’ই গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি সহায়তা ও চিকিৎসা অনুদান বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা শেষে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সচিবালয় প্রান্তে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন উপজেলা প্রান্তে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মতবিনিময় করেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী ২০২০-২০২১ অর্থবছরে স্নাতক পর্যায়ে ১ কোটি ৬৩ লাখ ৮৮২জন ছাত্র-ছাত্রীর মাঝে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বাবদ ৮৭ কোটি ৪৩ লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ টাকা ও ভর্তি সহায়তা বাবদ ১২৩ শিক্ষার্থীকে ৬ লাখ ৬৮হাজার টাকা দুর্ঘটনায় আহতদের আর্থিক অনুদান বাবদ চারজন শিক্ষার্থীকে দুই লাখ টাকাসহ মোট ৮৭ কোটি ৫২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা বিতরণের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে শিক্ষার উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষা এটাই হচ্ছে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এটা শুধু দেশে না বিদেশেও।’

কারিগরি শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে। সেখানে আমাদের অনেক টেকনিক্যাল লোক লাগবে। অনেক দক্ষ জনশক্তি প্রয়োজন হবে। কাজেই সেই দক্ষ জনশক্তিই আমরা সৃষ্টি করতে চাই। এই দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করলে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা ব্যাপক অবদান রাখতে পারবে। কাজেই সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

বিজ্ঞাপন

তার সরকারের মেয়াদে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণের কথা উল্লেখ করেন এবং বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সময়ও যখন সবকিছু বন্ধ হয়ে গেছে তখনও বই ছাপিয়ে তা সুষ্ঠভাবে বিতরণ করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১০ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৩৬৬ কোটি বই বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসের কারণে জানি স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এটি একটা কষ্টকর ব্যাপার। আমরা আশা করছি যে, আগামী ৩০ মার্চ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে সক্ষম হবো। এরইমধ্যে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যত শিক্ষক কর্মচারী যারা আছে তাদের সকলকেই টিকা নিতে হবে। সেই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এরইমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে দিয়েছি। টিকা সবাইকে দেওয়া হবে। আর ইউনিভার্সিটি বা কলেজে ডব্লিউএইচও’র নির্দেশনা মোতাবেক যে বয়স পর্যন্ত টিকা নেওয়া যাবে না, তার উপরের বয়সে যারা সেসব শিক্ষার্থীদেরও টিকা দেওয়া হবে। কাজেই আমরা সকলে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় থাকব, সেটিই আমরা চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা চাই, বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। যেহেতু জাতির পিতা এদেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। কাজেই বাংলাদেশকে আমরা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে চাই। দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ করতে হলে অবশ্যই শিক্ষা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ এবং জাতির পিতার যে চিন্তা আদর্শ সেটা নিয়ে আমরা চলি। শিক্ষার খরচটাকে আমরা খরচ মনে করি না। এটাকে আমরা একটা বিনিয়োগ মনে করি। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বিনিয়োগ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা যে স্বীকৃতি পেয়েছি। সেটি আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে এবং ধরে রাখার জন্যই দরকার শিক্ষার প্রসার, উপযুক্ত দক্ষ কারিগর এবং নাগরিক। আমরা সেই দক্ষ নাগরিক এবং উপযুক্ত নাগরিক গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।’

শিক্ষা সহায়তায় সবসময় শিক্ষার্থীদের পাশে থাকার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার জন্য আমরা সবসময় সহায়তা দিয়ে থাকি। আমি আমার ছোট বোন, আমরা পৈত্রিক যে সম্পত্তি বা যে টাকা-পয়সা পেয়েছিলাম, সেটা দিয়ে আমরা একটা বঙ্গবন্ধ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করি। এই ফান্ডের আমাদের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে থাকি। একেবারে প্রাথমিক থেকে উচ্চ শিক্ষা পর্যন্ত। সেখানে প্রায় ১৪’শ থেকে ১৫’শ শিক্ষার্থীকে আমরা বৃত্তি দেই। যদিও দুভার্গ্য যে ২০০৭ যখন ইমাজেন্সি ডিক্লেয়ার হয় তখন এটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের ফাইলপত্র থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু সীজ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে পুনরায় আবার এটা চালু করেছি।’

শিক্ষা সহায়তায় সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের যারা বিত্তশালি তারাও এগিয়ে আসবেন। তারাও ট্রাস্ট ফান্ডে অর্থ বরাদ্দ দেবেন বা নিজ নিজ এলাকা বা নিজ নিজ স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় যে যেখানে পড়াশোনা করেছেন, সেগুলোর উন্নয়নে সবাই মনোযোগী হবেন। যেখান থেকে লেখাপড়া শিখে আজকে বিত্তশালী হয়েছে, সেই জায়গাগুলোর প্রতি যদি সবাই যত্মবান হয় তাহলে আমার মনে হয় কোনো অসুবিধা হয় না।

ইনশাল্লাহ, জাতির পিতা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা সেই স্বপ্ন পূরণ করব আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। সচিবালয় প্রান্তে বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

সারাবাংলা/এনআর/একে

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর