অপহরণের ৫ দিন পর শিশুকে উদ্ধার, গ্রেফতার ২
২ মার্চ ২০২১ ১১:৩৯
ঢাকা: আশুলিয়া থেকে আলী হোসেন নামের ৬ বছরের এক শিশুকে অপহরণের পর ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করতে চেয়েছিল একটি চক্র। তবে র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতায় পাঁচ দিন পর শিশুটিকে চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় মো. জাকির হোসেন (২১) ও শান্ত মিয়া (২৯) নামে অপহরণ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার (১ মার্চ) বিকেলে র্যাব-৪ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) জিয়াউর রহমান চৌধুরী এ তথ্য জানান।
এ বিষয়ে জিয়াউর রহমান বলেন, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি অভিযোগের ভিত্তিতে জানতে পারা যায়, বিকালে ঢাকা জেলার আশুলিয়া মডেল থানাধীন কাঠগড়া এলাকা থেকে ছয় বছরের শিশু মো. আলী হোসেন অপহৃত করা হয়েছে। পরবর্তীতে অপহৃত শিশুটিকে বাইপাইল এবং সায়েদাবাদ হয়ে চট্রগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ঘটনার পরের দিন অপহরণকারী চক্রটি মোবাইল ফোনে শিশুটির বাবা-মায়ের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। আর ওই টাকা দুইদিনের মধ্যে না দিলে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন তারা।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৪’র একটি আভিযানিক দল ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে র্যাব-৭’র সহায়তায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানাধীন সেকেন্দার কলোনী এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে শিশু আলী হোসেনকে উদ্ধার করে। এ সময় মো. জাকির হোসেন ও শান্ত মিয়া নামের অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, অপহরণকারী মো. জাকির হোসেন ভুক্তভোগীর বাবার টিনশেড বাসার ভাড়াটিয়া এবং অপহরণকারীরা স্থানীয় একটি গার্মেন্টস কারখানায় প্যাকিং ম্যান হিসেবে কাজ করতেন। চক্রটির মূলহোতা পলাতক আসামি মো. সোহান গ্রেফতারকৃতদের সঙ্গে মুক্তিপণের মাধ্যমে আদায়কৃত টাকা ভাগাভাগির চুক্তি করে শিশুটিকে অপহরণ করার পরিকল্পনা করে।
র্যাব-৪ আরও জানায়, অপহরণের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক পলাতক আসামি মো. সোহান ভুক্তভোগীশিশুটিকে চিপস্ ও খেলনা কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাভারের কাঠগড়া পলানপাড়া এলাকায় শিশুটির নিজ বাসা থেকে রিকশাযোগে পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় নিয়ে যায়। পরে গ্রেফতারকৃত আসামিরা একসঙ্গে মিলে সিএনজি চালিত অটোরিকশা যোগে সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ডে এবং পরবর্তীতে বাসযোগে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী থানার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের সেকেন্দার কলোনীতে গ্রেফতারকৃত আসামি জাকিরের চাচার বাসায় নিয়ে আটকে রাখে।
র্যাব জানায়, অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা পলাতক মো. সোহান ভুক্তভোগীর বাবার সঙ্গে মুক্তিপণের বিষয়ে দর-কষাকষি করে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে। একপর্যায়ে শিশুটির বাবা অপহরণকারীদের বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠান।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে সাভারের বিভিন্ন এলাকায় অপহরণসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। তারা খোঁজ-খবর নিয়ে ধনী পরিবারের শিশুদেরই অপহরণ করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অদূর ভবিষ্যতেও এই রুপ শিশু অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪’র জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছে র্যাব।
সারাবাংলা/এসএইচ/এনএস