শিশুদের জন্য সুন্দর-শান্তিময় আবাসস্থল নির্মাণের আহ্বান ফখরুলের
২ মার্চ ২০২১ ১৫:১০
ঢাকা: শিশুদের জন্যে সুন্দর-শান্তিময় আবাসস্থল নির্মাণে সকলকে উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুরে বাংলাদেশ জিয়া শিশু একাডেমির একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিএনপি মহাসচিব এই আহ্বান জানান। রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১১তম জাতীয় শিশু শিল্পী প্রতিযোগিতা ‘শাপলা কুঁড়ি-২০১৯’ এর পুরস্কার বিতরণী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অুনষ্ঠানে প্রধান অতিথি মির্জা ফখরুল নিজ হাতে শিশুদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতার এই ৫০ বছরের আমাদের শিশুদের জন্য কি সত্যিকার অর্থে একটা ভালোবাসার দেশ, একটা প্রেমের দেশ, একটা স্বপ্নের দেশ নির্মাণ করতে পেরেছি? না, আমরা সেটা করতে পারিনি। আমরা আমাদের শিশুদের জন্য সেই আবাসস্থল তৈরি করতে পারিনি, যেখানে তারা নিরাপদে গড়ে উঠবে মানুষের মতো।’
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সকলের কাছে আমার আহ্বান থাকবে যে, আসুন আমরা সবাই মিলে উদ্যোগ নিই; চেষ্টা করি শিশুদের জন্যে সত্যিকার অর্থেই একটা শান্তিময় নিরাপদ পৃথিবী গড়ে তোলার। আসুন আমরা সবাই মিলে এই বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই হাসি-গান আর ফুলের একটি দেশ বানিয়ে তুলি। এটাই হোক আমাদের লক্ষ্য।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেক বয়স হয়েছে। আমরা কিছু পরে হয়তো পৃথিবী ছেড়ে চলে যাব। এই কোভিডে আমাদের অনেক গুণি মানুষ চলেও গেছেন। আমরা দেখে যেতে চাই, সত্যিকার অর্থেই বাংলাদেশ শিশুদের জন্যে সন্দুর, ন্যায়ভিত্তিক, আনন্দ ও প্রেমময় একটি জগৎ তৈরি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বার বার করে আমার মনে হয়, শিশুদের জন্য আবাসস্থল তৈরি করতে না পারার দায় আমাদের। আমরা যারা এদেশ স্বাধীন করেছিলাম, লড়াই করে, যুদ্ধ করে; আমরা যারা কথা দিয়েছিলাম যে, এই দেশ একটা গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব, এই রাষ্ট্রকে আমরা সহনশীল, উদার রাষ্ট্র বানাবো- এই দায় তাদের। আমাদের দুর্ভাগ্য পুরোপুরিভাবে সেটা আমরা করতে পারিনি। আমরা নিজেদের মধ্যে দলাদলি করেছি, কোন্দল করেছি, বিভক্ত হয়েছি।’
একাত্তরের স্বাধীনতার স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই বছর আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূরণের। এই মাসটি স্বাধীনতার মাস। এই মাসে বাংলাদেশের মানুষেরা আমরা নিজেদেরকে মুক্ত করার জন্যে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর হাত থেকে, আমরা যুদ্ধে নেমেছিলাম। সত্যিকার অর্থে যুদ্ধ কিন্তু। কোনো খেলা খেলা যুদ্ধ নয়। সেই যুদ্ধে ডাক দিয়েছিলেন শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। যার নামে এই প্রতিষ্ঠান। তিনি ওই সময়ে সেনাবাহিনীর মেজর ছিলেন। তারপরে যুদ্ধ নয় মাস হয়েছে, বহু মানুষ মারা গেছে, বহু মানুষের ক্ষতি হয়েছে। এখানে গণহত্যা হয়েছে।’
শিশুদের উন্নয়ন ও বিকাশের প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে টেলিভিশনে ‘নতুনকুঁড়ি’ অনুষ্ঠান চালুর কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল নতুন কুঁড়ি অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অনেক শিল্পী নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। আমি জানি অনেকে রাজনীতি অঙ্গনে গিয়ে মন্ত্রীও হয়েছেন। এটা যখন বন্ধ হয়ে যায় তারপরেই জিয়া শিশু একাডেমি ও শাপলাকুঁড়ি প্রতিযোগিতা শুরু হয়।’
এই শিশু প্রতিযোগিতার সারাদেশে ২২ হাজার ক্ষুদে শিল্পীরা বাছাই পর্বে অংশ নেয়। এতে চূড়ান্ত পর্বে উত্তীর্ণ হয় ৪৭৬ জন।
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে শিক্ষায় অধ্যক্ষ সেলিনা আখতার, স্বাস্থ্য সেবায় অধ্যাপক হাসিনা আফরোজ, সঙ্গীতে এএসএম শফি মন্ডল, শিল্পায়নে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, প্রবাসী কল্যাণে খান মনিরুল মনি, জনপ্রতিনিধি মনিরুল আলম সেন্টু ও আদর্শ মা মৌসুমি সাহাকে ‘কমলপদক-২০২০’ প্রদান করা হয়। সংগঠনের নির্বাহী মহাপরিচালক এম হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে এবং মাশুক সিদ্দিকী ও নওশিন রথির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে একাডেমির পৃষ্ঠপোষক এলবার্ট পি কস্টা, কন্ঠশিল্পী খুরশীদ আলম, জিনাত রেহানা, সামিনা আখতার সম্পা ও সুলতানা জামান জ্যোস্না বক্তব্য দেন।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম