চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে চকলেট ও বাদামের প্যাকেটের ভেতর পাচারের সময় ১৭ হাজার পিস ইয়াবাসহ একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতার হওয়া পাচারকারী কৌশলে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা তল্লাশি এড়িয়ে বিমানে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় একাধিকবার ইয়াবা নিয়ে গেছেন।
সোমবার (১ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর কোতোয়ালির মোড়ে মধুবন বেকারির সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় তার ট্রাভেল ব্যাগে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয় বলে জানান কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন।
গ্রেফতার ইমতিয়াজ ইকরাম (৩২) উখিয়া উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের মরিচ্যা গ্রামের সোলেমান কেরাণী বাড়ির মোস্তফা কামালের ছেলে।
ওসি নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে জানান, কক্সবাজার থেকে বাসে এসে কোতোয়ালির মোড়ে নেমে যান ইমতিয়াজ। এরপর টেম্পুতে ওঠার জন্য তিনি অপেক্ষা করছিলেন। সেখান থেকে স্টেশন রোডে গিয়ে বাসে করে ঢাকায় যাওয়ার কথা ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে আটক করে তার ট্রাভেল ব্যাগে তল্লাশি করে। সেখানে বিদেশি চকলেট ও বাদামের প্যাকেটের ভেতরে পাওয়া যায় ইয়াবা।
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি নেজাম বলেন, ‘গ্রেফতার ইমতিয়াজ অসম্ভব কৌশলী একজন ইয়াবা পাচারকারী। গত প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সে কক্সবাজার থেকে ঢাকায় ইয়াবা পাচার করে আসছে। সে কক্সবাজার থেকে সরাসরি বিমানে চারবার ইয়াবা নিয়ে ঢাকায় গেছে। নিরাপত্তাকর্মীদের তল্লাশি এবং স্ক্যানিংয়ে কোথাও তার ব্যাগের ভেতরে রাখা ইয়াবা ধরা পড়েনি বলে সে জানিয়েছে। এছাড়া সড়কপথে ইয়াবা আনার সময়ও সে নানা কৌশল অবলম্বন করে। কখনও কক্সবাজার থেকে এসে পটিয়ায়, কখনও ক্রসিং এলাকায়, আবার কখনও মইজ্যার টেকে নেমে যায়। তারপর লোকাল অটোরিকশা কিংবা বাসে করে শহরে প্রবেশ করে। এতে সে পুলিশের চেকপোস্টে তল্লাশি এড়াতে সক্ষম হয়।’
অভিযানে অংশ নেওয়া কোতোয়ালি থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জয়নাল আবেদিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে ইমতিয়াজ জানিয়েছে, সে কক্সবাজারের হলিডে মোড়ে একটি হোটেলের ম্যানেজার ছিল। ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে হোটেলটি ভাড়া দেওয়ার পর তার চাকরি চলে যায়। এরপর সে রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করে এমন একটি এনজিওতে চাকরি নেয়। করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর পর সড়কপথে পুলিশের চেকপোস্টের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার সুযোগে সে দ্রুত বড়লোক হওয়ার আশায় ইয়াবা পাচার শুরু করে।’
‘ইমতিয়াজ জানিয়েছে, কক্সবাজারের জনৈক নেজামের কাছ থেকে ইয়াবাগুলো সংগ্রহ করে সে মোস্তফা কামাল নামে আরও একজনসহ ঢাকায় যাচ্ছিল। আমরা ইমতিয়াজকে ধরতে পারলেও মোস্তফা কামালকে পাইনি। মামলায় ইমতিয়াজের সঙ্গে নেজাম এবং মোস্তফা কামালকেও আসামি করা হয়েছে’- বলেন এএসআই জয়নাল আবেদিন।