‘চট্টগ্রামে প্রথম পাকিস্তানের পতাকায় আগুন দেওয়া হয়’
২ মার্চ ২০২১ ২১:৩৯
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ১৯৭১ সালের ২ মার্চ চট্টগ্রামে প্রথম পাকিস্তানের পতাকায় আগুন দেওয়া হয় বলে এক আলোচনা সভায় জানিয়েছেন চট্টগ্রামের কয়েকজন সম্মুখসারির বীর মুক্তিযোদ্ধা।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) বিকেলে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা পরিষদ আয়োজিত আলোচনা সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৫০ বছর আগের দিনটির স্মৃতিচারণ করেন।
সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, ১৯৭১ সালের ১ মার্চ পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ইয়াহিয়া খান হঠাৎ করেই সংসদ অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেন। এই ঘোষণার পর বাঙালির স্বাধীনতার আন্দোলন দাবানলের মতো বিস্ফোরিত হতে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এদিন প্রতিবাদী জনসভা আয়োজন করে ছাত্রলীগ। ২ মার্চ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রজনতার সমাবেশে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করা হয়। কিন্তু একইদিন চট্টগ্রামেই প্রথম পাকিস্তানের পতাকায় আগুন দেওয়া হয়।
‘১ মার্চ চট্টগ্রামের তৎকালীন জিন্নাহ পার্কে (বর্তমান শহিদ মিনার) ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভা থেকে সিদ্ধান্ত হয়— ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর ঘোষিত কর্মসূচির সঙ্গে সমন্বয় রেখে ২ মার্চ চট্টগ্রামে হরতাল পালিত হবে। পাশাপাশি একইদিন লালদিঘী ময়দানে সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়। ২ মার্চ চট্টগ্রামে সর্বাত্মক হরতাল পালিত হয়। বিকেলে লালদিঘী ময়দানে সমাবেশ হয়,’— বলেন বক্তারা।
সেদিনের স্মৃতিচারণ করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা আরও বলেন, সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চাকসুর তৎকালীন ভিপি মো. ইব্রাহিম। বক্তব্য রাখেন তৎকালীন ছাত্রনেতা মৌলভী সৈয়দ, এস এম ইউসুফ, এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, নঈম উদ্দিন, আইয়ুব বাঙালি, আব্দুল্লাহ আল হারুনসহ চট্টগ্রামের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রসংসদের ভিপি-জিএসরা। সমাবেশে পাকিস্তানের পতাকায় আগুন দেন তৎকালীন মাধ্যমিক স্কুল ছাত্রসংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. ইউনুচ। সেদিনের সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন শফিউল বশর, অমল মিত্র, এনামুল হক, সফর আলীসহ অনেকে।
‘বাংলাদেশের স্বাধীনতায় চট্টগ্রামের ভূমিকা অপরিসীম। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ লালদিঘী ময়দানের সেই প্রতিবাদের স্ফূলিঙ্গ দাবানলের মতো সারা চট্টগ্রামে ছড়িয়ে পড়েছিল,’— বলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং বিজয় মেলা পরিষদের মহাসচিব মুহাম্মদ ইউনুচের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল হক বীরপ্রতীক, মাহাবুবুল আলম, পঙ্কজ দস্তিদার, নগর আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ মাহমুদুল হক, নগর শ্রমিক লীগ নেতা সাইফুর রহমান স্বপন, যুবলীগ নেতা শরফুদ্দীন চৌধুরী রাজু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আলী রেজা পিন্টু, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রনি, ছাত্রলীগ নেতা একরামুল হক রাসেল ও মায়মুন উদ্দীন মামুন।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর