Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মালিবাগের মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে তরুণের ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২ মার্চ ২০২১ ২০:২৯

ঢাকা: রাজধানীর মালিবাগ রেলগেট এলাকায় হলি লাইফ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে ইয়াছিন মিয়া (১৯) নামে এক তরুণের ‘অস্বাভাবিক’ মৃত্যু হয়েছে। মাস দেড়েক আগে ওই কেন্দ্রে ভর্তি হওয়া ইয়াছিন গলায় গামছা পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে হলি লাইফ কর্তৃপক্ষ। তবে পরিবারের দাবি, তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২ মার্চ) দুপুরে ইয়াসিনকে হলি লাইফ থেকে খিদমাহ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের জন্য ইয়াছিনের মরদেহ বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠিয়ে পুলিশ।

বিজ্ঞাপন

ইয়াছিনের বাবা মাসুম মিয়া জানান, তাদের বাড়ি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার বড়পাশা গ্রামে। মেরুল বাড্ডা ডিআইটি প্রজেক্ট এলাকায় থাকেন তারা। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে সবার ছোট ইয়াছিন।

মাসুম মিয়া আরও জানান, ইয়াছিনের একটি মোটরসাইকেল আছে। তবে আরও একটি মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন তিনি। না দিলে আত্মহত্যা করবেন বলে হুমকিও দেন।

ইয়াছিনের বাবা মাসুম মিয়া বলেন, আমরা মালিবাগের হলি লাইফের কথা শুনেছি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, সেখানে দ্বীনের কাজ চলে। ছেলেরা যেন আল্লাহর রাস্তায় থাকে, সেরকম শিক্ষা দেওয়া হয়। মাসে ২২ হাজার করে টাকা দিতে হয়। গত ২২ জানুয়ারি সেখানে ইয়াছিনকে ভর্তি করি। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার ছেলের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু দেখা করতে দেয়নি। শুধু পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে চলে আসি।

মাসুম মিয়া আরও বলেন, আজ (মঙ্গলবার) দুপুর ১২টার দিকে হলি লাইফ থেকে ফোন দিয়ে তাড়াতাড়ি যেতে বলে। সেখানে গিয়ে দেখি, ইয়াছিনকে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামিয়ে আনছে। পরে জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, ছেলে অসুস্থ। তাকে হাসপাতালে নিতে হবে। পরে খিদমাহ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার ইয়াছিনকে মৃত ঘোষণা করেন। তখন আবার শুনি, ইয়াছিন বাথরুমে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

বিজ্ঞাপন

অভিযোগ করে মাসুম মিয়া বলেন, আমার ছেলে গলায় ফাঁস দিয়য়ে আত্মহত্যা করেনি। তাকে নির্যাতন করে মেরেছে। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে। আমি সেখানে  বাথরুম দেখেছি। সেখানে গলায় ফাঁস দেওয়ার মতো কোনো জায়গা নাই।

হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জানান, ২২ জানুয়ারি থেকে হলি লাইফে ছিল ইয়াছিন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে সেখান থেকে ইয়াছিনের বাবাকে ফোন দিয়ে জানানো হয়, ইয়াছিন অসুস্থ। তাকে খিদমাহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে তার বাবা খিদমাহ হাসপাতালে গিয়ে ইয়াছিনের লাশ দেখতে পান।

এসআই আরও বলেন, ইয়াছিন ট্যাবলেট সেবন করত বলে শুনেছি। এছাড়া কিছু মানসিক সমস্যাও ছিল। দুপুরে নিরাময় কেন্দ্রটির বাথরুমে গিয়ে গলায় গামছা পেচিয়ে ফাঁস দেয় সে। পরে দেখতে পেয়ে নিরাময় কেন্দ্রটির লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। মরদেহের বাম পায়ের গোড়ালিতে পুরাতন আঘাতের দাগ আছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।

মৃত ইয়াছিনের ময়নাতদন্ত করেন ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে ডা. সোহেল বলেন, তার গলায় দাগ আছে। বাম হাতে কনুইয়ের ওপরে ও বাম পাঁজরে আঘাতের চিহ্ন পেয়েছি। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য গলা থেকে টিস্যু, ভিসেরা ও রক্ত সংগ্রহ করেছি। সেগুলোর রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

সারাবাংলা/এসএসআর/টিআর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

২ দিনে আয় ২৮৯ কোটি টাকা
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:৩২

মৌসুমী হামিদের সংসার যেমন চলছে
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৬

সম্পর্কিত খবর