মিয়ানমারে বিক্ষোভে গুলি, আরও ৯ মৃত্যু
৩ মার্চ ২০২১ ১৭:৪০
মিয়ানামারে গণতন্ত্রপন্থিদের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে আরও অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী এবং স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্র নিশ্চিত করেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মঙ্গলবার (২ মার্চ) মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানানোর একদিন পর বুধবার (৩ মার্চ) নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিবর্ষণে হতাহতের ঘটনা ঘটলো। এ নিয়ে দেশটিতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সহিংসতায় মোট ৩৯ জনের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া গেলো। খবর রয়টার্স।
এর মধ্যে, দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্ডালায় একটি বিক্ষোভস্থলে সংঘর্ষে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে পুলিশের গুলিতে ছয় ব্যক্তির মৃত্যু হয়। মধ্যাঞ্চলীয় মায়েনগিয়ান শহরে পুলিশের গুলিতে আরেক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে মায়েনগিয়ান থেকে ছাত্রনেতা মোয়ে মিন্ট হেইন টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী তাদের ওপর গুলি করেছে। একজনের মৃত্যু হয়েছে, তার বয়স কম, কিশোর, তার মাথায় গুলি লেগেছে।
পাশাপাশি পশ্চিমাঞ্চলীয় শিন রাজ্য, উত্তরাঞ্চলীয় কোচিন রাজ্য, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শান রাজ্য, মধ্যাঞ্চলের সাগাইং ও দক্ষিণাঞ্চলের দাওই শহরেও প্রতিবাদ অব্যাহত রয়েছে বলে সংবাদ মাধ্যম ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।
শিন রাজ্যের বাসিন্দা আন্দোলনকারী সালাই লিয়ান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মিয়ানমারের কেউই একনায়কতন্ত্র চায় না। এ ব্যাপারটি বিশ্বের সামনে তুলে ধরাই তাদের লক্ষ্য।
এদিকে, ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৩০০ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে বলে বার্তা সংস্থা মিয়ানমার নাও জানিয়েছে। তাদের মধ্যে গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের শীর্ষ কয়েকজন নেতাও রয়েছেন।
এসব ঘটনার বিষয়ে ক্ষমতাসীন সামরিক কাউন্সিলের (এসএসি) মুখপাত্রের কোনো মন্তব্য পায়নি রয়টার্স।
মিয়ানমারের অশান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বেড়ে চললেও অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশন্সের (আসিয়ান) সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মঙ্গলবার এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে কোনো অগ্রগতি অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি সংযম দেখানোর আহ্বান জানালেও সদস্য দেশগুলোর মধ্যে শুধু ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ফিলিপিন্স ও সিঙ্গাপুর সু চি ও অন্যান্য বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে, ১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সামরিক শাসনের অধীনে থাকা দেশটির গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা রুদ্ধ হয়ে গেছে। অভ্যুত্থানের পর থেকেই সামরিক শাসন বিরোধী গণতন্ত্রপন্থিরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।
সারাবাংলা/একেএম