মিয়ানমার বিক্ষোভে ‘সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন’, ৩৮ মৃত্যু
৪ মার্চ ২০২১ ১৪:৪২
মিয়ানমারে বুধবার (৩ মার্চ) বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলি এবং সংঘর্ষে অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদিনকে সামরিক অভ্যুত্থানের পর ‘সবচেয়ে রক্তাক্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ। খবর রয়টার্স।
এর মধ্যেই দেশটির গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) নতুন করে বিক্ষোভে নামার অঙ্গীকার করেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এক মাস আগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই সেখানে বিক্ষোভ ও রক্তপাত ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলো মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে সংযম দেখানোর আহ্বান জানানোর পরদিনই এক মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি ঘটল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে রয়টার্স জানিয়েছে, বুধবার পুলিশ ও সৈন্যরা গুলি চালানোর আগে বিক্ষোভকারীদের সেভাবে সতর্কও করেনি। মং সংখ নামের এক আন্দোলনকারী বলেন, তারা জানেন, যে কোনো সময় গুলিতে মৃত্যু হতে পারে। কিন্তু জান্তার অধীনে বেঁচে থাকার কোনো অর্থ নেই। মুক্তির জন্য বিপজ্জনক এই পথই বেছে নিয়েছি তারা।
মিয়ানমারের জেনারেল স্ট্রাইক কমিটি অব ন্যাশনালিটিস বৃহস্পতিবার প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মং সংখ। বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে তাদের আরও অন্তত দুইটি বিক্ষোভ আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে অন্যান্য আন্দোলনকারীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে জানিয়েছেন।
এদিকে জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিনা শানার নিউ ইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, মিয়ানমারে ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর থেকে ৩৮ মৃত্যু নিয়ে বুধবার সবচেয়ে ‘রক্তাক্ত দিন’ ছিল, এতে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দৃঢ় করার চেষ্টায় মোট মৃত্যু ৫০ ছাড়িয়ে গেছে। অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠীগুলো ও কিছু গণমাধ্যম বুধবারের সহিংসতায় আহত ও নিহতের ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যা দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে চার শিশু রয়েছে বলে একটি দাতব্য সংস্থা জানিয়েছে।
ক্রিস্টিনা শানার জানান, অভ্যুত্থানের প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কয়েকটি দেশের কঠোর পদক্ষেপ ও নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে পারে বলে বাহিনীটির উপপ্রধান সোয়ে উয়িনকে সতর্ক করেন তিনি।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এর উত্তর ছিল: তারা নিষেধাজ্ঞায় অভ্যস্ত আর তারা বেঁচেও ছিলেন।
Sad news of bloody clashes and loss of life reach us from Myanmar. I appeal to the authorities involved that dialogue may prevail over repression, and ask the international community to ensure that the aspirations of the people of Myanmar are not stifled.
— Pope Francis (@Pontifex) March 3, 2021
তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে বলে যখন আবার সতর্ক করলেন, উত্তর ছিল: অল্প কিছু বন্ধু নিয়ে চলা শিখতে হবে তাদের।
এছাড়াও, কয়েকশত আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে স্থানীয় কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে। এসব বিষয়ে মন্তব্য নেওয়ার জন্য ফোন করা হলেও ক্ষমতাসিন সামরিক কাউন্সিলের (এসএসি) মুখপাত্র জবাব দেননি বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি দল এক বিবৃতিতে নিহতদের স্মরণে তাদের কার্যালয়গুলোতে পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে বলে জানিয়েছে।
কূটনীতিকরা জানিয়েছেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের শুক্রবার (৫ মার্চ) এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসার কথা আছে।
সারাবাংলা/একেএম