Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জনগণের কল্যাণে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
৪ মার্চ ২০২১ ১৬:৩৯

ঢাকা: জনগণের কল্যাণে গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (৪মার্চ) সকালে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞানশিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, এনএসটি ফেলোশিপ এবং গবেষণা-অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন থেকে ভার্চুয়ালি ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুক্ত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যে ফেলোশীপ দিচ্ছি বা অর্থ বরাদ্দ করেছি, এটি কিন্তু জনগণেরই অর্থ। কাজেই জনগণের কল্যাণেই যেন সেটি কাজে লাগে, সেই দিকটায় বিশেষ দৃষ্টি দিয়ে আপনারা গবেষণার কাজ চালিয়ে যাবেন।’

১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তী সরকারগুলোর সমালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যখন কোন দেশে গণতন্ত্র থাকে না। মিলিটারি ডিটেকটর ক্ষমতা দখল করে কোন দেশে, সেখানে ক্ষমতাদখলকারীরা দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে না। তারা ক্ষমতাকে নিষ্কণ্টক করার জন্য দেশের ছাত্রসমাজ, যুবসমাজ, সবার উপরেই যেমন অত্যাচার করে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়।’

‘আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে এ ব্যাপারে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে শিক্ষার একটা পরিবেশ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছি। যদিও করোনাভাইরাস আমাদেরকে আরেকটা সমস্যার সৃষ্টি করে দিয়েছে। প্রায় এক বছরের মতো আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখতে হয়েছে। এটা মানুষের জীবনটাকে সুরক্ষা করার জন্যই করা হয়েছে। তবে এরইমধ্যে আমরা ভ্যাকসিন শুরু করেছি। এই টিকাদান কর্মসূচিতে শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। কাজেই ভ্যাকসিন দেওয়াটা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা মার্চ মাসের শেষের দিকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সক্ষম হবো।’

বিজ্ঞাপন

‘আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় শিক্ষাকে খুব গুরুত্ব দেয়। কিন্তু বিশ্বব্যাপী যদি আমরা দেখি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এটা তো আমাদের অগ্রগতি সাধন করার একটা উপায়। গবেষণা ছাড়া বা বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিক্ষা ছাড়া কীভাবে একটা জাতি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। কারণ বিজ্ঞানের যুগে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন উদ্ভাবন হচ্ছে। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের চলতে হবে। তার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেই।’

সরকারের ধারাবাকিতায় মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের সক্ষমতা অর্জনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ। এই ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি বলেই করোনা মোকাবিলায় আমরা যথেষ্ট সহযোগিতা ও সুযোগ পেয়েছি।’

শিক্ষাকে বহুমুখি করে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার দিকে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার গুরত্বের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন এবং সেই লক্ষ্যে উচ্চ শিক্ষা প্রসারে ২০০৯ সাল থেকে এই পর্যন্ত ১৮টি নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষার কার্যক্রম চালু করার কথা তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের মেয়াদে শিক্ষার বহুমখী উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করার তুলে ধরেন এবং হাইটেক পার্ক ও ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কথা উল্লেখ করেন।

দক্ষ জনশক্তির সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারি। কারণ বিজ্ঞান প্রযুক্তিকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে ৪৯০টি উপজেলায় এবং ৯০টি ইউনিয়নে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্লাব গঠন করা হয়েছে সে কথা তুলে ধরেন। রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের চিন্তাভাবনা আছে। তবে সেখানে আমরা জায়গা দেখছি, জায়গা খুঁজছি। ওই অঞ্চলটাকে আমরা আরও উন্নত করতে চাই।’

বাংলাদেশের সকল বিভাগীয় শহরে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার তৈরি করার কথা তুলে ধরেন। বিশেষ দক্ষতা সম্পন্ন বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ তৈরির লক্ষ্যে, গবেষক তৈরির লক্ষ্যে দেশে-বিদেশে বিজ্ঞান প্রযুক্তি গবেষণা অধ্যয়নে উচ্চতর শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করে সরকারের নানামুখী উদ্যোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী গবেষণার ফলে কৃষিতের বিভিন্ন সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমরা সেই মাটি আর মানুষ নিয়েই বাংলাদেশকে উন্নয়নশূীল দেশ হিসেবে আমাদের অবস্থান করতে পেরেছি। আমরা ভবিষ্যতে উন্নত দেশ হিসাবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করব। কাজেই সবসময় চাই, মানবকল্যাণেই কাজ করতে হবে। আপানারা এইটুকু মনে রাখবেন, আমরা যে ফেলোশীপ দিচ্ছি বা অর্থ বরাদ্দ করেছি, এটা কিন্তু জনগণেরই অর্থ। কাজেই তা যেন জনগণের কল্যাণে লাগে। জনগণের কল্যাণেই যেন সেটা কাজে লাগে, সেই দিকটায় বিশেষ করে দৃষ্টি আপনারা গবেষণার কাজ চালিয়ে যাবেন। সেটা আমরা চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। কৃষিকে আধুনিকীরণ করা, যান্ত্রিকীকরণ করা, আমাদের জনসংখ্যা বেশি, কৃষি উৎপাদনের জায়গা কম। কিন্তু সেটাকে ব্যবহার করে আমরা আমাদের দেশে কিন্তু স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। কাজেই সেটা মাথায় রেখেই আমাদের গবেষণায় জোর দিতে হবে। বাংলাদেশ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে যেন গড়ে তুলতে পারে, সেটিই আমরা চাই। কাজেই দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টি করে দেশে এবং বিদেশেও কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা যাবে। আমরা সেদিকেই লক্ষ্য রাখছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ১০০টা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। এখানে শিল্প প্রতিষ্ঠিত হবে। সেখানেও গবেষণার একান্ত প্রয়োজন আছে এবং গবেষণার মধ্য দিয়ে আমরা ব্যয় কমাতে পারি, উৎপাদনের উৎকর্ষকতা বাড়াতে পারি, পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারি, আমাদের রপ্তানি খাতে আমরা শুধু একটা বা দুইটার উপর নির্ভরশীল না। আমরা বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করে পণ্য রফতানি করতে পারি।’

তা ছাড়া আমাদের দেশে অনেক সুযোগ রয়েছে। আমাদের রফতানি পণ্য বাড়াতে হলে সেখানেও কিন্তু গবেষণার প্রয়োজন আছে। কাজেই আশা করি আপনারা সবাই নতুন নতুন পণ্য সৃষ্টি এবং আমাদের রফতানি যেন অব্যাহত থাকে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তন প্রান্তে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আ ফ ম রুহুল হকসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এনআর/একে

গবেষণা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

বিজ্ঞাপন

নতুন ইসির শপথ রোববার দুপুরে
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২৩

আরো

সম্পর্কিত খবর