Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার: ভারত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৪ মার্চ ২০২১ ১৭:০০

ঢাকা: প্রতিবেশী হিসেবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যুতেও বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলে মনে করে ভারত। ঢাকা সফররত দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এ কথা বলেছেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের তাৎপর্য ‘প্রতিবেশী প্রথমে’ এবং ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির জন্য ক্রমবর্ধমান প্রাসঙ্গিকতার মধ্যে নিহিত। আমরা বাংলাদেশকে কেবল দক্ষিণ এশিয়াতেই নয়, বিস্তৃত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেও একটি মূল প্রতিবেশী এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবিচনা করি। দুই দেশের সম্পর্কের প্রতিটি অর্জন এই অঞ্চলকে প্রভাবিত করে। আমরা অন্যদের কাছে এই সম্পর্ককে একটি অনুকরণীয় উদাহরণ হিসেবে উদ্ধৃত করি।

বিজ্ঞাপন

ঝটিকা সফরে ঢাকায় এসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে এসব কথা বলেন। এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠক করেন।

আরও পড়ুন- নো ক্রাইম, নো বর্ডার কিলিং: ভারত

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের কথা রয়েছে। সেই সফরের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করতেই ঢাকা এসেছেন বলে জানান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর।

কিনি বলেন, ‘এই সফর খুবই স্মরণীয় হবে। কারণ এটি করোনাভাইরাস মহামারির পরে ভারতের বাইরে তার প্রথম এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বাংলাদেশে দ্বিতীয় সফর।’

মোদির ঢাকা সফরের তাৎপর্য তুলে ধরে জয়শঙ্কর আরও বলেন, ‘আমরা জানি, এটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ একটি বছর। কারণ দুই দেশ মুজিববর্ষ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পালন করছে। এই তিনটি বার্ষিকীর প্রতি আমরা যে গুরুত্ব আরোপ করেছি এবং সেইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের প্রতি আমাদের যে অপরিসীম সম্মান, তা এতে প্রতিফলিত হয়।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক গৎবাঁধা অংশীদারিত্বের ঊর্ধ্বে এবং আমি বিশ্বাস করি যে আমাদের বন্ধন শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও প্রগতিশীল দক্ষিণ এশিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নের কেন্দ্রবিন্দু। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে উভয় পক্ষই এই সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। বিশেষত ২০১৪ সালের মে মাসে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তা দৃঢ় হয়েছে।’

আরও পড়ুন- ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর

‘আমরা নিরাপত্তা, বাণিজ্য, পরিবহন ও সংযোগ, সংস্কৃতি, মানুষে-মানুষে সম্পর্ক থেকে শুরু করে জ্বালানি ও আমাদের অভিন্ন সম্পদ এবং প্রতিরক্ষা সম্পর্কের যৌথ বিকাশসহ সব ক্ষেত্রে আমাদের অংশীদারিত্বকে সম্প্রসারিত করার জন্য কাজ করছি,’— বলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের স্বাচ্ছন্দ্যের মাত্রা এখন এত বেশি যে আমরা দেখিয়েছি— এমন কোনো সমস্যা নেই যা আমরা আলোচনা করতে পারি না বা বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে পারি না।’

বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাস দুই দেশের বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করার সুযোগ করে দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘কোভিড মহামারি সত্ত্বেও আমাদের মিথস্ক্রিয়া ও পরামর্শ আদান-প্রদান অব্যাহত ছিল। আমরা ডিসেম্বরে ভার্চুয়াল শীর্ষ সম্মেলন করেছি, সেপ্টেম্বর মাসে যৌথ পরামর্শক কমিশন, পররাষ্ট্র, জ্বালানি ও স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক, পুলিশ প্রধানদের বৈঠক, বিএসএফ-বিজিবি আলোচনা এবং প্রতিরক্ষা সফর করেছি। বাণিজ্য, পানিসম্পদ ও নৌপরিবহন খাতে আমাদের সচিব পর্যায়ের বৈঠক শিগগিরই হবে। এসব বৈঠক উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতিকেই তুলে ধরে।’

তিনি আরও বলেন, ভারতে উৎপাদিত কোভিড ভ্যাকসিনের সবচেয়ে বড় গ্রহীতা বাংলাদেশ। এছাড়াও বন্ধুদের মধ্যে আমাদের ভ্যাকসিনের সবচেয়ে বড় উপহারটিও (২০ লাখ ডোজ) এই দেশের জন্য ছিল।

এর আগে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে ঝটিকা সফরে ঢাকা পৌঁছান ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। বিএএফ বঙ্গবন্ধু বিমান ঘাঁটিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন তাকে স্বাগত জানান।

সংক্ষিপ্ত সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ রয়েছে জয়শঙ্করের। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, বৈঠক শেষে বিকেলেই নয়া দিল্লি ফিরে যাবেন তিনি।

সারাবাংলা/জেআইএল/টিআর

এস জয়শঙ্কর ঝটিকা সফর ড. এ কে আবদুল মোমেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর