কাগজে-কলমে ৩০০ শ্রমিক, কিন্তু কাজ করছে স্ক্যাভেটর
৭ মার্চ ২০২১ ১৮:২১
বগুড়া: ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার আমইল-ইন্দইল দিয়ে বয়ে যাওয়া ৬ কিলোমিটার খাল পুনরায় খননের কাজ শুরু করা হয়েছে। খনন কাজে কাগজে-কলমে ৩০০ শ্রমিক দেখানো হলেও ব্যবহার করা হচ্ছে স্ক্যাভেটর মেশিন। ফলে এলাকার দরিদ্র জনগোষ্টী আপদকালীন কর্মসংস্থান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
জানা গেছে, উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের আমইল-ইন্দইল ৬ কিলোমিটার খাল খননের জন্য ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়।
গত বুধবার দুপুরে সরেজমিনে ছোট আখিড়া অংশে গিয়ে দেখা যায়, খালের মাঝখানে একটি স্ক্যাভেটর মেশিন দিয়ে শুধুমাত্র কাদামাটি খনন করে খালের দু’পাড়ে তুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে সেখানে কাজের তত্ত্বাবধান করতে কাউকে দেখা যায়নি।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ এলাকার দরিদ্র শ্রমিকের মাধ্যমে খাল খনন করানোর কথা থাকলেও সেখানে স্ক্যাভেটর মেশিনের মাধ্যমে করানো হচ্ছে। শুধু তাই নয় নিয়মানুযায়ী- পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির (পাবসস) পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট বাস্তবায়ন কমিটি এ প্রকল্পের কাজ করবেন। কিন্তু গত বছরের ডিসেম্বরের শুরুতে এ কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে আহবায়ক করে ১৩ ডিসেম্বর তিন সদস্যের (পাবসস) আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটির মেয়াদকাল আগামী ৮ এপ্রিল পর্যন্ত। অর্থাৎ, পূর্বের কমিটি বর্তমান কমিটিকে অবগত করে খনন কার্যক্রমে পরিচালনা করার কথা। কিন্তু তা করা হচ্ছে না।
তবে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের দাবি, খনন কার্যক্রমে আহবায়ক কমিটির কোনো কাজ নেই। এদিকে স্ক্যাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কাটা হলেও মজুরির বিপরীতে দেখানো হচ্ছে শ্রমিক। বিল তুলতে ৩০০ শ্রমিকের ১২টি দল গঠন করা হয়েছে। এসব দলপতিদের ব্যাংক হিসেব নম্বরে বিল আসবে। এছাড়া যেভাবে খনন কার্যক্রম করা হচ্ছে তাতে খালটি নালায় পরিণত হচ্ছে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে খাল সংলগ্ন মাঠের ৬০০ হেক্টর জমিতে সেচ প্রদান কার্যক্রম ব্যহত হওয়ার আশঙ্কা স্থানীয়দের।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা ও বর্তমান কমিটির আহবায়ক আব্দুস সালাম জানান, খাল খনন কার্যক্রম দেখভাল কে করছেন, তিনি সে বিষয়ে অবগত নয়। এ বিষয়ে তাকে কেউ কিছু জানায়নি। কোন প্রক্রিয়ায় কাজ চলছে সেসব বিষয়ে জানতে তিনি এলজিইডি দপ্তরের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সাজেদুর রহমান বলেন, এ কাজের জন্য এলসিএস গঠন করা হয়েছে। খনন কার্যক্রমে আহবায়ক কমিটির কোনো কাজ নেই। শ্রমিক ও স্ক্যাভেটর মেশিন ব্যবহারের মাধ্যমেই খাল খনন হবে। বর্তমানে স্ক্যাভেটর মেশিনের কাজ চলছে।
সারাবাংলা/এনএস