কলেজে বিক্রি হচ্ছে প্রত্যয়নপত্র, ৭ মার্চেও তোলা হয়নি জাতীয় পতাকা
৭ মার্চ ২০২১ ১৯:০৫
সিরাজগঞ্জ: জেলার সদর উপজেলার বহুলী ইউনিয়নের ডি.কে.বি.ইউ কলেজে জমে উঠেছে ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট প্রত্যয়নপত্র বিক্রির ব্যবসা। এর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা টাকা। যা স্বীকারও করে নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আঞ্জুয়ারা সুলতানা।
এমনকি ৭ মার্চ’কে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার জাতীয় দিবস ঘোষণা করে সকল প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা দিলেও তাও মানছেন না অধ্যক্ষ। উত্তোলন করেননি জাতীয় পতাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১০টায় ২৫-৩০জন শিক্ষার্থী দাঁড়িয়ে থাকলেও খোলা হয়নি কলেজ। ১১টার আগে আসেন কলেজের পিয়ন। কিন্তু দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কোনো শিক্ষক আসেননি এবং উত্তোলন করা হয়নি জাতীয় পতাকা। এ সময় টাকা নিয়ে প্রত্যয়নপত্র কেনার জন্য অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা।
কয়েকজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অসংখ্য শিক্ষার্থী ৫০-১০০ টাকার বিনিময়ে প্রত্যয়ন পত্র কিনেছে। আমরাও কিনতে এসেছি। কিন্তু এখনো স্যাররা কেউ আসেনি। তবে স্যাররা আসবেন।
তারা আরও বলেন, শুনেছি প্রত্যয়নপত্রসহ আবেদন করলে সরকার ১০ হাজার করে টাকা দিবে। আর এই সুযোগে কলেজ বানিজ্যে লিপ্ত হয়েছে। অন্য দু’জন শিক্ষার্থী জানান, আমরা শুনেছি এগুলো সব ভুয়া তাই টাকা ফেরত নিতে এসেছি।
এ দিকে অধ্যক্ষের শুরুতেই এমন দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক থেকে শুরু করে এলাকাবাসীরা হতবাক হয়েছেন।
এ বিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আঞ্জুয়ারা সুলতানা বলেন, আমি ১ জানুয়ারি দায়িত্ব নিয়েছি। কিন্তু আসার পরে কলেজ থেকে দেওয়ার মতো কোনো প্রত্যয়নপত্র ছিল না। সেটা তৈরি করতে খরচ হয়েছে, তাই টাকা নেওয়া হচ্ছে।
তবে এটা ভুল হচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, সকল টাকা আমার কাছেই আছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করাটাও ভুল হয়েছে স্বীকার করলেও সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পতাকা উত্তোলনের কোনো ব্যাবস্থা করেননি তিনি।
এ বিষয়ে ডি.কে.বি.ইউ কলেজ কমিটির সভাপতি মো. হায়দার আলী মণ্ডল বলেন, টাকার বিনিময়ে প্রত্যয়ন পত্র বিক্রি ও আজকের এই ৭ মার্চ জাতীয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন না করা দুটোই গুরুতর অপরাধ এবং ক্ষমার অযোগ্য।
তিনি আরও বলেন, এটা বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতাকে অস্বীকার করার শামিল। অবশ্যই এ ব্যাপারে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিরাজগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল্লাহ বলেন, বিষয়টি আমি এখনই শুনলাম। অভিযোগ পেলে অথবা অভিযোগ না আসলেও আপনি আমাকে জানালেন তার ভিত্তিতেই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, বিষয়টি আপনি জানালেন- আমি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলব।
সারাবাংলা/এনএস
৭ মার্চ জাতীয় পতাকা উত্তোলন ডি.কে.বি.ইউ কলেজ প্রত্যয়নপত্র বিক্রি সিরাজগঞ্জ