হাজতি নিখোঁজ: ফায়ার সার্ভিসের তল্লাশির মাধ্যমে তদন্ত শুরু
৮ মার্চ ২০২১ ১৭:১৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খুনের মামলার আসামি এক হাজতি ‘নিখোঁজের’ ঘটনায় কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। কার্যক্রমের শুরুতে তদন্ত কমিটি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের মাধ্যমে কারাগারের অভ্যন্তরে তল্লাশি চালিয়েছে। এরপর তদন্ত সংক্রান্ত মূল কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোমবার (৮ মার্চ) সকালে প্রথমে কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত কমিটির প্রধান খুলনা বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি-প্রিজন) ছগির মিয়াসহ তিন সদস্য চট্টগ্রাম বিভাগের কারা উপমহাপরিদর্শক এ কে এম ফজলুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর তারা চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেন।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডিআইজি-প্রিজন ছগির মিয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘বলা হচ্ছে হাজতি কারাগার থেকে নিখোঁজ হয়েছে। আমরা কিন্তু সেটা সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করলে হবে না, যেহেতু আমরা তদন্ত করতে এসেছি। বিশাল কারাগার, অনেক সেফটি ট্যাংক, অনেক বড় বড় নালা-নর্দমা। হাজতি কোথাও মরে পড়েও তো থাকতে পারে। এখন আমার তো এত লজিস্টিক সাপোর্ট নাই যে, কারাগারের ভেতরে তল্লাশি করতে পারব। সেজন্য ফায়ার সার্ভিস কল করেছিলাম। তারা এসে সব সেফটি ট্যাংক-নালা, ভবনের ছাদ, কার্নিশসহ সব জায়গায় তন্নতন্ন করে খুঁজেছে। পাওয়া যায়নি, তবে তল্লাশি অব্যাহত আছে। এরপর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ আমরা সংগ্রহ করেছি। বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখছি।’
বন্দি নিখোঁজের ঘটনা তদন্তে গঠিত তিন সদস্যের কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের সুপার ইকবাল হোসেন ও বান্দরবান জেলা কারাগারের ডেপুটি জেলার ফোরকান ওয়াহিদ। তাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
নিখোঁজ হাজতি মো. ফরহাদ হোসেন রুবেল নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মীরেরকান্দি গ্রামের শুক্কুর আলী ভাণ্ডারির ছেলে। রুবেল নগরীর সদরঘাট থানায় দায়ের হওয়া একটি হত্যা মামলার আসামি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি আগ্রাবাদের মিস্ত্রিপাড়া থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি কারাগারে ছিলেন।
ফরহাদ হোসেন রুবেল কারাগারের পঞ্চম তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকতেন। শনিবার ভোর থেকে তাকে খুঁজে না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে নগরীর কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান।
এরপর চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মো. রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে রাতে কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়ের করেন। এতে বলা হয়েছে, শনিবার ভোর সোয়া ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে হাজতি রুবেল উধাও হয়ে যান। এরপর বিভিন্নভাবে তল্লাশি করেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ও ডেপুটি জেলারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। দুই কারারক্ষীকে বরখাস্ত ও এক কারারক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।
ঘটনা তদন্তে কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের তিন সদস্যদের কমিটির পর চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনও তিন সদস্যের একটি কমিটি করেছে। এতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই