অস্তিত্ব সংকটে ফেসবুক
২১ মার্চ ২০১৮ ২০:০৪
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলঙ্কারিতে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। এঘটনার পর এখন ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় গ্রাহকের আস্থা অর্জনে ফেসবুককে প্রচুর কাঠখড় পোড়াতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মূল অভিযোগ ফেসবুকের সঙ্গে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা নামে এক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা সংস্থার চুক্তি নিয়ে। অভিযোগ, ওই প্রতিষ্ঠানকে অ্যাপের মাধ্যমে নিজেদের বিপুল ব্যবহারকারীর তথ্য ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল ফেসবুক। যা এই সংস্থা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হয়ে প্রচারের কাজে লাগিয়েছে। ২০১৩ সালে তৈরি হওয়া এই ব্রিটিশ সংস্থাটিকে প্রায় দেড় কোটি ডলার অর্থ সাহায্য করেন রিপাবলিকান সমর্থক রবার্ট মের্কের। ফেসবুক তো বটেই, বিষয়টি সামনে আসায় নড়েচড়ে বসেছে ট্রাম্প প্রশাসনও। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস।
এই খবর প্রকাশের পর প্রথম ধাক্কাটা লাগে ওয়ালস্ট্রিটে। দুই দিনে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বেহাল হয়েছে ফেসবুকের তথা মার্ক জাকারবার্গের।
তবে পাঁচ কোটি গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি ফেসবুক কতৃপক্ষ। ফেসবুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে ফেসবুক। তবে এ ব্যাপারে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা।
যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলের পক্ষ থেকেই এই ঘটনা তদন্তের দাবি উঠেছে। এ ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে পক্ষ থেকে এই ঘটনার তদন্তের দাবি উঠেছে।
এই ঘটনায় নতুন বিতর্ক বাড়িয়েছে হোয়াটসঅ্যাপের প্রাক্তন যুগ্ম প্রতিষ্ঠাতা ব্রায়ান অ্যাকটনের একটি টুইট। বুধবার সকালে অ্যাকটন টুইট করেন, ‘সময় হয়েছে ফেসবুককে বিদায় জানানোর। #ডিলিটফেসবুক।’ তবে এই টুইট সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে, না কি এটা অ্যাকটনের নতুন কোনও সোশ্যাল অ্যাপের প্রচার নিয়ে, তা জানা যায়নি।
২০১৪ সালে ১৬০০ কোটি ডলারে হোয়াটসঅ্যাপ কেনে ফেসবুক। হোয়াটসঅ্যাপের তখনকার দুই মালিকের প্রথম জন জ্যান কৌউম ফেসবুকের সঙ্গে থেকে গেলেও টাকা নিয়ে নিজের আলাদা ব্যবসা শুরু করেন অ্যাকটন। মাসখানেক আগে সিগনাল নামে হোয়াটসঅ্যাপের প্রতিদ্বন্দ্বী একটি সংস্থায় ৫ কোটি ডলার বিনিয়োগও করেন তিনি।
তবে অ্যাকটনই প্রথম নন। গত বছর ফেসবুকের স্ট্র্যাটেজির বিরুদ্ধে সরব হন সংস্থার কর্তা চামাথ পালিহাপিটিয়া। ফেসবুক আমাদের সামাজিক বন্ধনগুলি ছিঁড়ে ফেলছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। পরে শিন পার্কার, জাস্টিন রোজেনস্টেইনের মতো ফেসবুক কর্তারাও সংস্থার স্ট্র্যাটেজির বিরুদ্ধে সরব হন।
সারাবাংলা/এমআই