নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন অসম্ভব: টিআইবি
৮ মার্চ ২০২১ ২৩:০১
ঢাকা: টেকসই উন্নয়ন ও সুশাসন নিশ্চিতে নারীর ক্ষমতায়ন, জেন্ডার সমতা এবং সব ক্ষেত্রে নারীর নেতৃত্ব প্রদানের মতো অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সোমবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এ আহ্বান জানায় সংস্থাটি। ‘টেকসই উন্নয়ন ও সুশাসন: নেতৃত্বে নারী ও সমতা’ প্রতিপাদ্যে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে এবছর নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করছে সংস্থাটি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। তাই নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন যেমন অসম্ভব, তেমনি নেতৃত্বে নারীর কার্যকর অংশগ্রহণ ছাড়া জেন্ডার সমতা ও সুশাসন নিশ্চিত করাও সম্ভব নয়। জেন্ডার অসমতা ও দুর্নীতি পরস্পর সম্পর্কিত। জেন্ডার অসমতা সুশাসন, টেকসই উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনকে বাধাগ্রস্ত করে। আবার দুর্নীতির কারণে পুরুষের তুলনায় নারীর ঝুঁকি বেশি।’
ইফতেখারুজ্জামান জানান, টিআইবি পরিচালিত জাতীয় খানা জরিপ-২০১৭-এর তথ্যমতে সেবাগ্রহণকারী হিসেবে ৩১ দশমিক ৮ শতাংশ নারী দুর্নীতির শিকার হয়েছে। এছাড়া আরেকটি গবেষণায় দেখা যায়, নারীর ওপর সুশাসনের ঘাটতি ও দুর্নীতির বহুমুখী প্রভাব রয়েছে। নারী যেমন দুর্নীতির শিকার হয়, তেমনি নারী দুর্নীতির মাধ্যম ও সংঘটক হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় দুর্নীতির কার্যকর প্রতিরোধে নারীর ক্ষমতায়ন ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
চলমান কোভিড-১৯ প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে ড. জামান আরও বলেন, ‘করোনা অতিমারি থেকে উত্তরণে সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সমানতালে নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিশেষ করে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে কোভিড-১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অবদান অনেক। সম্প্রতিকালে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শীর্ষ অনুপ্রেরণাদায়ী নারী নেতৃত্বের স্বীকৃতি তার প্রমাণ। কিন্তু, এমন সময়েও নারীদের প্রতি সহিংসতা কিংবা নারীদের অবদমনের প্রক্রিয়া বন্ধ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণায় দেখা যায়, কোভিড-১৯ অতিমারিকালে ৩০ দশমিক ৫৪ শতাংশ নারী শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, ২২ দশমিক ৯৯ শতাংশ নারী যৌন নীপিড়নের শিকার হয়েছেন, ৭৬ দশমিক ৫৩ শতাংশ নারীর দৈনন্দিন জীবনাচার নিয়ন্ত্রণ এবং ৩৫ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ নারী অর্থনৈতিকভাবে নীপিড়নের শিকার হয়েছেন। আর ৪৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ নারী শারীরিক ও যৌন উভয় ধরনের নীপিড়নের শিকার হয়েছেন।’
উল্লেখ্য, সুশাসন ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়ন অর্জনে করণীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২১ উপলক্ষে টিআইবি ৮ দফা দাবি উত্থাপন করেছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: কোভিড-১৯ সংকটকালে উপার্জনমূলক কর্মকাণ্ড, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, ন্যয়বিচার লাভ ও সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব নিশ্চিতে যথাযথ ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সারাবাংলা/জিএস/এমআই