‘বিদেশি মেহমানদের আগমনে রাজনৈতিক মাঠে পানি ঘোলার চেষ্টা চলছে’
৯ মার্চ ২০২১ ০০:২৪
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, এ বছরটি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বছর। এ বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাঙালির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিদেশি মেহমানরা বাংলাদেশে আসবেন। সে কারণেই আমাদের এই রাজনৈতিক অঙ্গনের পানি ঘোলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সোমবার (৮ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন আলোচনা সভায়। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ প্রান্তে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতারাসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতার ঐতিহাসিক সেই ভাষণের বক্তব্যের তাৎপর্য তুলে ধরে নানক আরও বলেন, এই দিকদর্শন ছিল বাঙালির শুধু মুক্তিযুদ্ধের রণকৌশল নয়, শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধের রণকৌশল নয়, তিনি জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। যদি আর কোনোদিন না ফিরতে পারেন, আর যদি কোনোদিন মানুষের কাছে কোনো কথা বলতে না পারেন, সে পরিস্থিতিতেও কী করতে হবে— সেটিই তুলে ধরেছিলেন এই বক্তব্যে। তাই ৭ মার্চের ভাষণ বাঙালি জাতির কাছে এক দর্শননামা।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতিকে ‘তুমি’ বলে সম্মোধন করার যে কর্তৃত্ব বঙ্গবন্ধু অর্জন করেছিলেন, তার জন্য তাকে ১৯৪৮ সাল থেকে বায়ান্ন, বায়ান্ন থেকে বাষট্টি, বাষট্টি থেকে ঊনসত্তর ও সত্তরে ২৪ বছর থাকতে হয়েছে কারাগারে। মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছে বারবার। ফাঁসির কাষ্ঠকে আলিঙ্গন করতে হয়েছে জাতির পিতাকে তার জীবনে বহুবার।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে মানবমুক্তির আন্দোলনের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী উদাহরণ আখ্যা দিয়ে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর বিশ্ব প্রামাণ্য দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো। তার অবদান নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আপনার।
বিএনপি নেতাদের প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে নানক বলেন, এই বাংলাদেশে আবার যারা ১৫ আগস্ট ঘটাতে চায়, এই বাংলাদেশে আবার যারা ১৫ আগস্ট ঘটানোর স্বপ্ন দেখে, ঔদ্ধত্য দেখায়— তাদের বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে আমাদের। ওদের আস্তানাকে নিক্ষেপ করতে হবে বঙ্গোপসাগরে। এ বাংলাদেশ শেখ মুজিবের বাংলাদেশ, এ বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। এ বাংলাদেশ শেখ হাসিনার বাংলাদেশ।
‘সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। এ বছরটি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বছর। মুজিববর্ষ আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বিদেশি মেহমান আসবে বাংলাদেশে। তাই আমাদের এই রাজনৈতিক অঙ্গনের পানি ঘোলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের সব শক্তি দিয়ে আমরা যদি মোকাবেলা করতে পারি, ওদের যদি বিতাড়িত করতে পারি, তাহলে বলব— আজ এই যে আওয়ামী লীগের ব্যানারে স্লোগান হোক, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে এ অপশক্তিকে বিতাড়িত করতে হবে,’— বলেন নানক।
গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ প্রান্তে সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকী এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, শ্রম ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, মেরিনা জাহান কবিতা, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী, উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। এছাড়া আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্যরা।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর