বুড়িগঙ্গার দূষণ বন্ধে রাজউকের প্রতি ৭ দফা নির্দেশনা
৯ মার্চ ২০২১ ২২:৪৯
ঢাকা: বুড়িগঙ্গা নদীর পানি দূষণ বন্ধে ঢাকা ওয়াসা এবং রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রতি কয়েকদফা নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট। এর মধ্যে রাজউকের প্রতি ৭ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৯ মার্চ) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এসব নির্দেশনা দেন।
আদালতে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে শুনানি করেন মনজিল মোরসেদ। পরিবেশের অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আমাতুল করিম, ওয়াসার পক্ষে উম্মে সালমা এবং রাজউকের পক্ষে ইমাম হোসেন।
পরে মনজিল মোরেসদ জানান, আদালত ঢাকা ওয়াসাকে বুড়িগঙ্গা নদী তীরবর্তী এলাকায় সকল ভবন মালিক ও ব্যবসায়ী যাদের ভবনে পয়ঃপ্রণালি লাইনের সংযোগ বা সেপটিক ট্যাংকের ব্যবস্থা নেই কিন্তু পানির সংযোগ দেওয়া হয়েছে তাদের ৭ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে নোটিশ দিয়ে তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে পানি শোধনের ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এ নোটিশ প্রদান এবং উক্ত নোটিশ সম্পর্কে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সবার অবগতির জন্য প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে ওয়াসাকে নদী তীরবর্তী এলাকায় জনসাধারণকে জানাতে মাইকের মাধ্যমে উক্ত বিষয় প্রচার করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওয়াসার এমডিকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রথম অগ্রগতি প্রতিবেদন পরে প্রতি তিন মাসে অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালত রাজউকের প্রতি সাত দফা নির্দেশনা দেন, সেগুলোর মধ্যে আছে— কোনো লে-আউট প্ল্যানে সেপটিক ট্যাংক ও পয়ঃলাইন না থাকলে অনুমোদন না করার নির্দেশ; সেপটিক ট্যাংক না থাকলে ভবনের অকুপ্যানসি সার্টিফিকেট দেওয়া যাবে না; আইন ভেঙে কাজ করলে ভবন নির্মাণ আইনের ১২ ধারায় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ; তিন থেকে ছয় মাসের নোটিশ দিয়ে ভবনে পয়ঃপানি শোধনের ব্যবস্থা নতুবা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ; পরবর্তীতে তৈরিকৃত সেপটিক ট্যাংক মূল নকশার অংশ বিবেচিত হবে; নোটিশের পর কোনো ভবন মালিক মডিফাই না করলে ইমারত নির্মাণ আইনের সাত ধারায় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ১৫ দিনের মধ্যে প্রথম অগ্রগতি প্রতিবেদন পরে প্রতি তিন মাসে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ।’
মনজিল মোরসেদ আরও জানান, বুড়িগঙ্গার পানি দূষণ বন্ধে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)-এর ২০১০ সালে দায়ের করা জনস্বার্থের রিট মামলায় ২০১১ সালের ১ জুন হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়ে ওয়াসা এমডিকে ছয় মাসের মধ্যে নদীতে সংযোগকৃত পয়ঃ এবং বর্জ্য লাইন বন্ধ করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে রিট মামলাটি চলমান রাখা হয়। আদেশ বাস্তবায়নে পদক্ষেপ না নেওয়ায় এইচআরপিবির পক্ষে সম্পূরক আবেদন দাখিল করে ব্যবস্থা নিতে আবেদন জানালে আদালত কয়েক বার এভিডেভিট দাখিলের নির্দেশ দিলে ওয়াসার এমডি পক্ষে গত ২১ জানুয়ারি এবং ৪ ফেব্রুয়ারি এভিডেভিট দাখিল করা হয়। উক্ত এভিডেভিটের জবাবে আপত্তি দাখিল করে এইচআরবিপি পক্ষে যথাযথ আদেশ ও নির্দেশ প্রার্থনা করলে শুনানি শেষে মঙ্গলবার আদালত এই আদেশ দেন।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমআই