Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মায়ের পিছু নেওয়ায় ছাত্রকে বেধড়ক পেটালেন শিক্ষক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১০ মার্চ ২০২১ ১৮:২৬

চট্টগ্রাম ব্যুরো: জন্মদিনের আগেরদিন মাদরাসায় ছেলেকে দেখে ফিরছিলেন মা। আট বছর বয়সী শিশুটিও মায়ের পেছন পেছন মাদরাসা থেকে বেরিয়ে যায়। সেটা দেখে ক্ষুব্ধ হন এক শিক্ষক। ক্রোধের প্রকাশ ঘটান শিশুটিকে নির্মমভাবে পিটিয়ে।

মঙ্গলবার (৯ মার্চ) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার কনক কমিউনিটি সেন্টারের পাশে আল মারকাযুল কোরআন ইসলামিক একাডেমি মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটেছে।

এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন অভিযান চালিয়ে মাদরাসা শিক্ষক হাফেজ মো. ইয়াহিয়াকে আটক করেন। কিন্তু শিশুটির মা-বাবা শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে রাজি না হওয়ায় তাকে ছেড়ে দিতে হয়। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন ইউএনও রুহুল আমিন।

ইউএনও রুহুল আমিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ (বুধবার) শিশুটির জন্মদিন ছিল। গতকাল বিকেলে তার মা সন্তানকে মাদরাসায় দেখতে যান। মা বিদায় নিয়ে চলে আসার সময় শিশুটিও পেছন পেছন মাদরাসার বাইরে চলে আসেন। সেটা দেখে শিক্ষক মোহাম্মদ ইয়াহিয়া তার ঘাড় ধরে মাদরাসার ভেতর নিয়ে বেত দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। আমি বিভিন্ন মাধ্যমে খবরটি জানতে পারি। এরপর রাতে ওই মাদরাসায় অভিযান চালায়।’

রাত দেড়টায় শিক্ষক ইয়াহিয়াকে আটক করে ইউএনও’র কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে উদ্ধার করে তার পরিবারের কাছে দেওয়া হয়। তার মা-বাবাকেও ইউএনও কার্যালয়ে ডেকে নেওয়া হয়। কিন্তু তার মা-বাবা কোনোভাবেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করতে রাজি হননি। একপর্যায়ে তার মা ইউএনওকে লিখিতভাবে জানান, তিনি এ ঘটনায ‘ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত’ হয়েছেন, তবে শিশুর ভবিষ্যৎ বিবেচনায় ওই মাদরাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেবেন না।

‘রাতে বুঝিয়েছি, আজ (বুধবার) দুপুর পর্যন্ত উনাদের আমি বুঝিয়েছি যে মামলা করা দরকার। কিন্তু উনারা কোনোভাবেই রাজি হননি। আমরা আপাতত শিক্ষককে ছেড়ে দিয়েছি। তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিচ্ছি। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে’-বলেন ইউএনও।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘শিক্ষককে আবারও থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। শিশুটিকে এমন নির্মমভাবে পেটানো হলো কেন, সেটা তার কাছে জানতে চাওয়া হবে। এরপর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এদিকে জন্মদিনে বুধবার দুপুরে শিশুটিকে দেখতে হাটহাজারীতে তার বাসায় যান ইউএনও রুহুল আমিন। এসময় তিনি শিশুটিকে কিছু উপহার দিয়ে তার সঙ্গে কিছুক্ষণ সময় কাটান।

সারাবাংলা/আরডি/এমআই

মাদরাসা শিক্ষক শিশুকে পিটুনি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর