‘৩ জনে ১ জন নারী সহিংসতার শিকার’
১০ মার্চ ২০২১ ১৯:৫৪
বিশ্বে প্রতি তিনজনে একজন নারী শারীরিক নির্যাতন কিংবা যৌন হয়রানির শিকার হন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) প্রকাশিত নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে নারী প্রতি সহিংসতায় শীর্ষ ছয় দেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেই সংক্ষিপ্ত তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশ, কিরিবাতি, ফিজি, পাপুয়া নিউগিনি, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব দ্য কঙ্গো এবং আফগানিস্তান।
ডব্লিউএইচও’র প্রতিবেদন বলছে, ইউরোপে নারীর প্রতি সহিংসতা সবচেয়ে কম। সেখানে ২৩ শতাংশ নারীর সহিংসতার শিকার হওয়ার ইতিহাস রয়েছে।
এছাড়াও, সব খবর প্রকাশিত না হওয়ায় নারীর প্রতি সহিংসতার প্রকৃত তথ্য পাওয়া কঠিন বলে জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
এদিকে, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে ব্যবস্থা নিতে বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। সহিংসতার শিকার নারীদের অবস্থার উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়ন্ত্রণের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে নারী ও শিশুরা ফাঁদে পড়ে সহিংসতার শিকার হন, এমন কথা জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ১৫-৪৯ বছর বয়সী নারীদের ৩১ শতাংশের (৮৫ কোটি ২০ লাখ) শারীরিক নির্যাতন বা যৌন সহিংসতার শিকার হওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে।
এত বৃহৎ পরিসরে এ ধরনের গবেষণা এর আগে হয়নি। ১৮ বছরে চালানো বিভিন্ন জরিপের ভিত্তিতে এ গবেষণা করা হয় — জানিয়েছে ডব্লিউএইচও।
কর্মকর্তারা বলছেন, নারীর প্রতি সহিংসতা রোধে মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি। এজন্য ছেলেদেরকে স্কুলেই মেয়েদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের শিক্ষা দেওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে ডব্লিউএইউচও মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইসাস বলেন, প্রতিটি দেশ এবং সংস্কৃতির ভেতর নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। সহিংসতার শিকার হয়ে লাখ লাখ নারী এবং তাদের পরিবার ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। করোনা মহামারির কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দরিদ্র দেশগুলোতে স্বামী অথবা ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মাধ্যমেই নারী বেশি সহিংসতার শিকার হন। প্রতি চারজনে একজন নারী ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মাধ্যমে সহিংসতার শিকার হন। অনেক সময় ১৫ বছর বয়স থেকে যৌন হয়রানির ঘটনা শুরু হয়।
অন্যদিকে, লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের জেন্ডার ভায়োলেন্স অ্যান্ড হেলথ সেন্টারের পরিচালক হেইডি স্টোয়েকেল গবেষণাকাজে অংশ নেন। তিনি বলেন, কয়েক দশকে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনায় তেমন কোনো বদল আসেনি।
স্টোয়েকেল বলেন, লিঙ্গসমতা রক্ষায় আইন পরিবর্তন করা প্রয়োজন। নারীরা যেসব আর্থসামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন, তা রোধে নিয়মতান্ত্রিকভাবে পুরো ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
পাশাপাশি, করোনা সংক্রমণের সময় লকডাউনে নারীরা অনেক ক্ষেত্রে নির্যাতনকারী পুরুষের সঙ্গে থাকতে বাধ্য হয়েছেন। ফলে সহিংসতার মাত্রাও বেড়েছে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বলছে, কলম্বিয়ায় লকডাউনে যৌন সহিংসতা আগের বছরের তুলনায় ১৭৫ শতাংশ বেড়েছে।
সারাবাংলা/একেএম