‘বনাঞ্চলে বেআইনিভাবে বসবাসরতদের বেরিয়ে আসতে হবে’
১১ মার্চ ২০২১ ১৬:৫৩
ঢাকা: সুন্দরবনসহ দেশের বিভিন্ন বনাঞ্চলে জীবন-জীবিকার তাগিদে অনেক মানুষই বসবাস করেন। তবে বংশ পরম্পরায় বসবাসরতদের সঙ্গে বেআইনিভাবেও অনেকে বসবাস করছেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, টেকসই বন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে এসব এলাকায় বেআইনিভাবে বসবাসরতদের বনের বাইরে বের হয়ে আসতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) আগারগাঁওয়ে বন অধিদফতরে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত ‘টেকসই বন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বনমন্ত্রী আরও বলেন, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার বনাঞ্চল ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং বনায়ন কার্যক্রম জোরদার করেছে। বনের অবৈধ দখল উচ্ছেদের মাধ্যমে বনভূমি পুনরুদ্ধার ও তা সংরক্ষণে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
শাহাব উদ্দিন বলেন, সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশে বনজসম্পদ সৃজন ও উন্নয়নে সূচিত হয়েছে এক নতুন গতিধারা। ফলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ভরে যাবে সবুজের সমারোহে। এই সবুজের অভীষ্ট লক্ষ্য টেকসই পরিবেশ উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, দৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত নির্মাণ, কর্মসংস্থান তৈরি ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলা করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য সুন্দর পৃথিবী নির্মাণ।
মন্ত্রী জানান, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম ও জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে বর্তমানে বাংলাদেশের বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ বেড়ে দেশের মোট আয়তনের ২২ দশমিক ৩৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এই বৃক্ষ আচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ ২৪ শতাংশের বেশি উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এরই মধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বন-নির্ভর জনগোষ্ঠীর বনের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে বিকল্প জীবিকায়ন কার্যক্রম গ্রহণের মাধ্যমে তাদের জীবনমান উন্নয়নে সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। পাশাপাশি বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে নিয়মিত অভিযান ও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কারণে জনসচেতনতা বেড়েছে। প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়ায় অপরাধ সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া মাত্রই আমরা দ্রুত সাড়া দিতে সক্ষম হয়েছি। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে টেকসই বন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে পারব।
অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ৫০টি টিয়া ও মুনিয়া পাখি প্রকৃতিতে অবমুক্ত করেন বনমন্ত্রী। এছাড়াও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবেশ ভাবনা নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্র, বাংলাদেশের পরিবেশ ও বন সংরক্ষণে প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের কর্মকাণ্ডের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পাশাপাশি স্বাধীনতার ৫০ বছরে বন অধিদফতরের অর্জন ও সম্ভাবনা নিয়ে একটি উপস্থাপনা দেখানো হয়।
বন অধিদফতরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. এ কে এম রফিক আহাম্মদ এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু।
সারাবাংলা/জেআর/টিআর